রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ভ্যাটের হার কমানোর প্রস্তাব জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ভ্যাট ও ট্যাক্স জমা দেওয়া ও রিটার্ন দেওয়ার পদ্ধতি সহজ করার কথা বলেছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানির সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে সেবা খাত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউজসহ অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব করা হয়।
আলোচনা সভায় ব্যবসায়ীদের দাবি শুনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, দেশের রাজস্ব কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা সহজে যাতে রিটার্ন দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা আমরা শুরু করেছি। এজন্য অনলাইনের মাধ্যমে গত অর্থবছর থেকে রিটার্ন নেওয়া শুরু করেছি। এ পর্যন্ত অনলাইনে ৬৭ হাজার মানুষ রিটার্ন জমা দিয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকক্ষেত্রেই ভ্যাট ও কর কমানো হচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য কর নেট বাড়ানো। আমরা বিশ্বাস করি কর নেট যত বাড়বে কর রেটও ততই কমবে। তিনি বলেন, যেকোন খাতের জন্য সুবিধা দিলে তার অপব্যবহার হয়। এজন্য যে খাতকে সুবিধা দিতে চাই তারাই যেন পায় সেটা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
পর্যটন খাতকে উদ্বুদ্ধ করতে বিনা শুল্কে টুরিস্ট ভেহিক্যাল আমদানির চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে পর্যটন খাত যাতে এ সুবিধা পায় সেটা নিশ্চিত করা কঠিন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, এর আগে আমরা অ্যাম্বুলেন্স আমদানিতে সুবিধা দিয়েছিলাম। পরে দেখা গেল দেশে মাইক্রোবাস আমদানি একবারে শুন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সের নামে মাইক্রোবাস আমদানি শুরু হয়। এজন্য সুবিধার অপব্যবহার রোধ করতে চায় এনবিআর।
আলোচনায় সভায় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান প্রস্তাব করেন যে, মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দিনমজুরদের জন্য নিম্ন ও মাঝারী মানের রেস্তোরাঁ (বাংলা খাবার) ও স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রে ভ্যাট সর্বোচ্চ ৩% এবং ট্যাক্সের হার হবে সর্বোচ্চ ০.৫%। এক্ষেত্রে এসি এবং ননএসির তৎকালীন পার্থক্যটা তুলে দিয়ে এসি-ননএসি রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায়ের শতকরা হার সমভাবে প্রয়োগ করা যায়।
এছাড়া চার ও পাঁচ তারকা হোটেল রেস্তোরাঁ গুলোতে বিত্তবান ব্যক্তিরা সার্ভিস নিয়ে থাকে এবং তাদের রেয়াত নেওয়ার সুযোগ আছে। তাই এ সকল হোটেল রেস্তোরাঁর ভ্যাটের হার হবে সর্বোচ্চ ১৫% এবং ফাইন ডাইনিং- যে রেস্টুরেন্টে অধিক মূল্যের ও বিদেশী ফুড বিক্রয় হয় এবং সেখানে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ আয়ের চাকুরীজীবী মানুষজন সার্ভিস নিয়ে থাকে তাই এ সকল রেস্তোরাঁর ভ্যাটের হার হবে সর্বোচ্চ ১০% করার প্রস্তাব করেন তিনি।
এর বাইরে যেহেতু শিল্প কারখানায় কোম্পানী কর্তৃক সামাজিক কার্যক্রম হিসেবে খাবার খাওয়ানো হয় তাই শিল্প কারখানা ও কর্পোরেট ক্যাটারিং সার্ভিসের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার সর্বোচ্চ ২%, ট্যাক্স সর্বোচ্চ ১% করার কথা বলেন তিনি। এভাবে কর পুনঃর্বিন্যাসের প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।
এছাড়া সভায় ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব), বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন আলোচনায় অংশ নেয়।
এএ