আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের জাহাজীকরণের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমএ)। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিসিএমএ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের মৌলিক কাঁচামালের জাহাজীকরণ খরচ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় কারখানাগুলোতে সিমেন্ট উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশের খুচরা বাজারে সিমেন্টের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গত এক মাস পূর্বেও প্রতি টন কাঁচামালের বিপরীতে জাহাজীকরণ খরচ ছিল ১৭ মার্কিন ডলার, যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং প্রতিদিনই এ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও, অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাঁচামাল এবং উৎপাদিত পণ্য পরিবহন খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে সিমেন্ট তৈরির যে কয়েকটি মূল কাঁচামাল রয়েছে তার সবগুলোই আমদানি নির্ভর এবং এরমধ্যে ক্লিংকার অন্যতম।
বিসিএমএ’র প্রেসিডেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর কবির বলেন, একদিকে জাহাজীকরণের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি, অন্যদিকে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে দেশীয় সিমেন্ট কোম্পানিগুলো ব্যাপক লোকসান দিয়ে যাচ্ছে, যা কোনভাবেই দীর্ঘদিন চলতে পারবে না। এমতাবস্থায় সিমেন্ট কোম্পানিগুলো টিকে থাকার স্বার্থে মূল্য সমন্বয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখনই যদি মূল্য সমন্বয় না করা হয় তাহলে সিমেন্ট খাতে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে এই খাতে বিনিয়োগকৃত প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা হুমকির সম্মুখিন হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, শুল্ক ও কর মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব এ খাতে থেকে সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য যে, সিমেন্ট খাতে অতিমাত্রায় আয়কর এবং আমদানি শুল্ক বিরাজমান থাকায় বেশিরভাগ উৎপাদনকারী ব্যবসায় লোকসান দিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে বারংবার আবেদন করার পরেও কোন পরিবর্তন আসেনি। বিসিএমএ থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবর অনেকগুলো আবেদনপত্র দেয়া হয়েছে। এমনকি কয়েকদফা সরাসরি আলোচনা করেও যৌক্তিকতা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বিসিএমএ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু এনবিআর থেকে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নিতে না পারায় এক অর্থনৈতিক ভীতিকর অবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে করেন সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা।
এএ