খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামে ২ মাস বয়সী যমজ শিশু মনি ও মুক্তাকে হত্যা করে তার মা কানিজ ফাতেমা কনা। এরপর মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে বাচ্চা উধাও হওয়ার নাটক সাজান তিনি। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কানিজ ফাতেমা কনা।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে শিশু দুটির বাবা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে কানিজ ফাতেমা কনাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গতকাল দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনাকে শুক্রবার রাতে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক জানান, বাচ্চা দুটি সবসময় কান্নাকাটি করত। এ নিয়ে কনা বিরক্ত ছিলেন। কয়েকদিন আগে কনা তার স্বামীকে ফোন করে তাদেরকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। স্বামী মাসুম বিল্লাহ ১ মার্চে তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কনার যমজ সন্তান ঘুম থেকে জেগে যায় এবং কান্নাকাটি শুরু করে। তখন দুধ খাইয়ে তাদের ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করেন কনা। কিন্তু তাদের কান্না না থামায় তিনি নাক-মুখ চেপে ধরে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে নিয়ে ফেলে দেন বলে জানান তিনি।
এসআই এনামুল হক জানান, হত্যার পর কনা নাটক সাজান যে, তিনি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বিছানা থেকে বাচ্চা দুটি উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক কনার বাবা শেখ খায়রুজ্জামান ও মা শরিফা বেগমকে শনিবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোরে কুশলা গ্রামের শেখ খায়রুজ্জামানের ওরফে খায়ের শেখের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে কনার ২ মাস বয়সী ২ মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৪ বছর আগে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনি গ্রামের মাসুম বিল্লাহর সঙ্গে কনার বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে কয়েক মাস ধরে কনা বাবার বাড়িতে ছিলেন। আর মাসুম বিল্লাহ তার নিজের বাড়িতে থাকতেন। মাসুম বিল্লাহ একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন।