অ্যারোফ্লটের বিমান ব্রিটেনে অবতরণের নিষেধাজ্ঞা জারির পর নিজের বিমানবন্দর ও আকাশসীমাতে ব্রিটিশ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়া।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। এই পদক্ষেপ ‘যুক্তরাজ্যের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অবন্ধুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের’ প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত বা নিবন্ধিত সংস্থার মালিকানাধীন, ইজারা দেওয়া বা পরিচালিত বিমানের ফ্লাইট রাশিয়ার আকাশসীমা আর ব্যবহার করতে পারবে না।
যুক্তরাজ্যের অবন্ধুসুলভ সিদ্ধান্তের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোর নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।
যুক্তরাজ্যও পাঁচটি রাশিয়ান ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করেছে এবং সেসব ব্যাংককে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বাদ দিয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রুশ সৈন্যরা। শুক্রবার ইউক্রেনের এক কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। তবে ইউক্রেন সেনারা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি টুইট বার্তায় জানায়, ‘শত্রুরা’ এখন ওবোলোনে পৌঁছে গেছে। এটি কিয়েভ শহরের কেন্দ্রস্থল, কিয়েভের পার্লামেন্ট থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে।
স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, তারা যেন মলোতভ ককটেল তৈরি করে পাল্টা লড়াই শুরু করেন। সেই সঙ্গে অন্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাসায় থাকলেও বের হতে বারণ করা হয়েছে।
যুদ্ধের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকাল থেকে কিয়েভে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভে রাশিয়ার একটি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেন। অপরদিকে ইউক্রেনের বড় বড় অনেক শহর এবং সেনা ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, নাশকতাকারীরা কিয়েভে প্রবেশ করেছে। রাশিয়ার হামলায় সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধ করার উপযুক্ত সবাইকে দেশের জন্য অস্ত্র হাতে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের সরকার। একইসঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি ভিডিও বার্তায় রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভলোদামির জেলেনস্কি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে টেলিফোন করে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে হামলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়াকে রক্ষায় আর কোন বিকল্প ছিল না।
যদিও যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভের সময় শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে মস্কোর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন। এর কয়েক মিনিট পরই ইউক্রেনে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে সেখানে ‘শান্তি ফেরাতে’ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন। পুতিনের ঘোষণার পর সেখানে গোলাবর্ষণ আরও তীব্র হয়েছে।
এএ