রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবি মেনে নেয়া হয় নি। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিভাগের একাডেমিক কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিভাগের সভাপতি তাদেরকে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান করলে অনশনরত শিক্ষার্থীরা এ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
একাডেমিক কমিটির বৈঠকে ৬০ শতাংশের কম ক্লাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবেন না বলে জানানো হয়। ক্লাস উপস্থিতি না থাকায়
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৬০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকায় প্রথম বর্ষের ৫১জন ও দ্বিতীয় বর্ষের ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয়া হয়নি। তাই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসার দাবিতে গত রোববার বেলা ১১টা থেকে আইন বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ বলেন, ‘ক্লাস উপস্থিতি না থাকা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়ার কোন ক্ষমতা আমাদের নেই। জরুরি বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির বৈঠকে ক্লাস উপস্থিতি না থাকা শিক্ষার্থীদের ১ম বর্ষের সঙ্গেই থাকতে হবে। তবে আমরা সব বর্ষের দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, যেন পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা সেশনজটে না পড়ে।’
আন্দোলনে অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘অভিভাবক তুল্য শিক্ষকদের উপর আমরা অনেক আশাবাদী ছিলাম। আশা করেছিলাম একাডেমিক বৈঠকের পর আমাদেরকে ক্ষমা করে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। কিন্তু এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আমাদের অভিভাবকদেরকে ফোন করে হুমকি দেয়া হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক।’’
এদিকে অনশনরত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসানের বিরুদ্ধে। সোমবার রাত ১০টার দিকে বিভাগের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র থেকে তথ্য নিয়ে এ হুমকি দেয়া হয়। অনশনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান ও একজন সহকারী প্রক্টর গিয়ে আইন বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের থেকে তাদের পরিচয়পত্র নেয়া হয়।
সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের নাম ও পরিচয় লিখে নেয়া হয়। এরপর প্রক্টর শিক্ষার্থীদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। না গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান। এরপর তাদের থেকে পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে সেখানে ফোন করেন প্রক্টর। শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে হুমকি দেয়ার কারণে সোমবার রাতে একজন ও মঙ্গলবার সকালে আরও এক শিক্ষার্থীর বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, ‘তারা রোববার সকাল ১০ টা থেকে আইন বিভাগের সামনে অবস্থান করছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে রাত্রি যাপনের কোনো বিধান নেই তাই তাদেরকে বিভিন্নভাবে সেখান থেকে উঠে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু সোমবার রাতেও তারা সেখান থেকে না উঠলে শিক্ষার্থীদের পরিচয় লিখে নেয়া হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এখানে হুমকির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/এসএস