শিলিগুড়ি থেকে অটোয় উঠে ফুলবাড়ির ভাড়া ১৫ টাকা। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের ভাড়া আরও ১০ টাকা।
ব্যস, সপরিবারে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে খরচ মোটে ২৫ টাকা। গল্প নয়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে খুলে যাচ্ছে শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা সীমান্ত।
ফলে সমস্ত কাগজপত্র ও পরিচয় ঠিক থাকলে সারা দিন বাংলাদেশ ঘুরে দিব্যি সন্ধ্যার আগে শহরে ফিরে আসতে আর কোনও বাধা থাকছে না। আর এতে করে শুধু পর্যটন নয়, শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং পাহাড়ের শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি করে যোগ দান আশা করা হচ্ছে।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ি সীমান্ত খুলে যাওয়ার ব্যপারে সবুজ সংকেত চলে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। ওই দিন সীমান্ত খুলে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে দু’দেশের ‘ভিআইপি’ অতিথিদের জন্য বিশেষ অভ্যর্থনা আয়োজনের। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি সদর ইন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও ১৮ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত খুলে যাচ্ছে বলে খবর এসেছে। তবে সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। তবে আমরা প্রস্তুতিতে খামতি রাখতে চাইছি না।’’
সোমবার শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি পূর্ব পিনাকী মজুমদারের নেতৃত্বে একটি দল অভিবাসনের প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান। খতিয়ে দেখা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার হালও। আপাতত সমস্ত পরিকল্পনা মাফিকই হয়েছে বলে জানান এসিপি। আপাতত চারজন সাব ইন্সপেক্টর, তিনজন সহকারী সাব ইন্সপেক্টর, ন’জন কনস্টেবল রয়েছে। তবে অভিবাসন প্রক্রিয়া চালু হয়ে গেলে সীমান্ত ফাঁড়িতে আরও কিছু অফিসার ও কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী আশাবাদী এই সীমান্ত খুলে গেলে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তের চেয়ে গুরুত্ব বাড়বে শিলিগুড়ি লাগোয়া সীমান্তের। খাতায় কলমে জলপাইগুড়ি জেলা হলেও শিলিগুড়ি এই সীমান্তের নিকটবর্তী শহর। দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার।
মন্ত্রী জানান, তিনি ছাড়াও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সচিব স্তরের একজন থাকবেন রাজ্যের তরফে। কেন্দ্রেরও প্রতিনিধি থাকার কথা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাঁদের স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী সহ থাকার কথা দু’দেশের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর কর্তাদের। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় সময় বিকেল তিনটের সময় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, কার্শিয়াংয়ের বিভিন্ন স্কুলগুলি উপকৃত হবে। এটা সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আগামী দেড় বছরের মধ্যে এশিয়ান হাইওয়ের কাজ শেষ হয়ে গেলে এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকাঠামো বদলে যাবে।’’
শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু নিজে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী থাকার সময়ে স্থল শুল্ক দফতরের পরিকল্পনা হয়েছিল। এসেছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ও। তিনি এই সীমান্ত চালু হলে দুই বাংলার সাংষ্কৃতিক মিলন আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির গুরুত্ব তো বাড়বেই বলা বাহুল্য। তবে দু’দেশের বিশেষ করে আবেগও জড়িয়ে আছে। ভাবের আদান-প্রদানও দুদেশে সাংষ্কৃতিক যোগাযোগ খুলে দিতে পারে।
সূত্র: আনন্দবাজার
সানবিডি/ঢাকা/রাআ