পণ্যের সরবরাহ, চাঁদাবাজিসহ পথে পথে ভোগান্তি কমলে পণ্যের দামও কমবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পণ্যের সরবরাহ চেইন ঠিক রাখা দরকার।
চাঁদাবাজি কমাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির প্রথমসভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এর আগে সরকারের গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু সুপারিশ করেছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো-
>>সমুদ্র ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং শুল্ক স্টেশনসমূহ পবিত্র রমজানের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য খালাসে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ফেরি পারাপারে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়া ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
>>কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও মজুতকারীদের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়াতে হবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহায়তা করবে।
>>পাইকারি হতে খুচরাপর্যায়ে অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে কঠোর নজরদারি বাড়ানো এবং খুচরা পর্যায়ে মূল্যতালিকা প্রদর্শন এবং সব ধাপে পাকা রশিদ সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
>>‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ ২০১১’ -র ফরম ‘ঘ’ অনুসরণ করে সরবরাহের আদেশ (এসও) দিতে হবে এবং প্রকৃত ডিলার ছাড়া হাত বদল হওয়া এসও-তে পণ্য সরবরাহ না করার বিষয়ে মিলসমূহকে বাধ্য করতে হবে।
>>ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে পাইকারি হতে খুচরা সব পর্যায়ে পাকা রশিদ (প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানাসহ মুদ্রিত তথ্য) দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে।
>>ভোজ্যতেলের মিলগেট, পরিবেশক ও ভোক্তাপর্যায়ে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ, সঠিকভাবে প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন, অবৈধভাবে পণ্য মজুত ও বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত সব আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
>>ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল কর্তৃক অপরিশোধিত তেল আমদানির পরিমাণ, পরিশোধনের পরিমাণ ও পরিবেশকদের কাছে সরবরাহের পরিমাণে সামঞ্জস্য রয়েছে কি না, তা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে পাঠাতে হবে।
>>‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ, ২০১১’-এর অনুচ্ছেদ ৯(১), ৯(২), ৯(৩), ১২(১) ও ১২(৪) এবং ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩৮, ৪০ ও ৪৫ যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা ও কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে করণীয় হিসেবে মিলসমূহে তদারকি জোরদার করতে হবে।
>>মিল কর্তৃক পরিবেশক নিয়োগ সংক্রান্ত হালনাগাদ তালিকা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে সরবরাহ এবং ভোজ্যতেল রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এসময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএমএ শফিকুজ্জামানসহ ব্যবসায়ীরা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এএ