চাকরিরত অবস্থায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মৃত্যু হলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক (নাবালক) সন্তানের পড়াশোনার খরচ নির্বাহ করবে সরকার। এমন বিধান রেখে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বুধবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা এর আগেও আমরা একবার আলাপ করেছিলাম, যখন নীতিগত অনুমোদনের জন্য এসেছিল। আজ চূড়ান্ত অনুমোদন হলো। সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হবে। এটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে। সরাসরি সরকারি না স্বায়ত্তশাসিত টাইপের আর কি। এটা আইন দিয়ে হবে। ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। সরকারের পূর্ব অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে শাখা বা কার্যালয় স্থাপন করা যাবে। পরিচালনায় একটি ট্রাস্টি বোর্ড থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হলো চাকরিরত অবস্থায় একজন শিক্ষকের মৃত্যু হলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো সন্তান থাকলে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু থাকলে ও তৃতীয় লিঙ্গের কোনো শিশু থাকলে তাদের পড়াশোনার খরচ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।’

‘সহায়তা এককালীন দেওয়া হবে। এতে ২১ সদস্যের একটি ট্রাস্টিবোর্ড থাকবে সেখানে একজন চেয়ারম্যান থাকবেন। প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করবেন। সদস্য সচিব মহাপরিচালক কর্তৃক নিয়োগ করা একজন শিক্ষক হবেন। তারা তাদের মনোনয়নের তারিখ থেকে তিন বছরের জন্য ওই বোর্ডে থাকতে পারবেন।’

খসড়া আইন অনুযায়ী ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘ট্রাস্টের নামে বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো তফসিলি ব্যাংকে এটা রাখা হবে। এখান থেকে ব্যয় নির্বাহ করা হবে। ট্রাস্ট তার আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করবে এবং বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করবে। বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারের কাছে জমা দেবে অর্থাৎ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘তাদের কাজ হবে শিক্ষক ও পোষ্যদের জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া। শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রী-সন্তানের শিক্ষা সহায়তার জন্য এককালীন আর্থিক সাহায্য বা বৃত্তি দেবে। শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রী-সন্তানের জন্য বৃত্তিমূলক বা অন্যান্য পেশাগত আর্থিক সহায়তা দেবে। আর চাকরিরত অবস্থায় কোনো শিক্ষকের মৃত্যু হলে সেই শিক্ষকের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের জন্য পড়াশোনার খরচ ট্রাস্টের তহবিল থেকে নির্বাহ করা হবে।’

এএ