সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক নিজের দ্বৈত নাগরিকত্বের পরিচয় লুকিয়ে রেখে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এমন অভিযোগ করে তার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছে বিএনপি।

বিচারপতি মানিককে ব্লাকশিপ (কুলাঙ্গার) আখ্যায়িত করে দলটি বলেছে, অন্য দেশের প্রতি যার আনুগত্য থাকে সে কখনোই নিজ দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে পারে না। এর দ্বারা কখনো শুভ কাজ ও ন্যায় বিচার হতে পারে না।

শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার নিজেদের একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য যাদেরকে ইনস্ট্রুমেন্ট (উপকরণ) হিসেবে ব্যবহার করছিলেন, তাদের মধ্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক ছিলেন অন্যতম। বিচারপতি নিয়োগ করে সরকার তাকে নিজেদের ইচ্ছা পূরণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উচ্চ আদালতকে আওয়ামীকরণের অশুভ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বিচারপতি হিসেবে কাজ করে গেছেন। আর এটা করতে গিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও শামসুদ্দিন মানিকরা বিচারপতির নিরপেক্ষতাকে অপবিত্র ও ক্ষুণ্ণ করেছেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘সরকার আসলে গণতন্ত্র হত্যার কিলিং মিশনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক ও শামসুদ্দিন মানিকদের। সে মিশন তারা বাস্তবায়ন করেছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে আইন ও সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। এ বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। যার অন্য দেশের প্রতি আনুগত্য থাকে সে কখনোই নিজ দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে পারে না। এর দ্বারা কখনো শুভ কাজ ও ন্যায় বিচার হতে পারে না।’

রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘একজন বিচারপতির কী করে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকতে পারে? এটা সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক এবং ন্যায়ের বিচারে সে অপরাধী। এ ধরনের ব্যক্তি কখনোই নিরপেক্ষ বিচার করতে পারেন না। দ্বৈত নাগরিকত্ব লুকিয়ে রেখে বিচারকের দায়িত্ব পালনের জন্য বিচারাঙ্গণের এ সাবেক ব্লাকশিপের (কুলাঙ্গার) বিচার হওয়া উচিত। আমরা সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিককে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে তার বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির নিকট আবেদন জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও বিএনপির কাউন্সিলকে সামনে রেখে উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের মতো একই কায়দায় একই আচরণ শুরু করেছে সরকার। বিএনপির প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তার, ধরপাকড় ও বাসা-বাড়িতে গিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শিরিন সুলতানা, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।