বৃক্ষমানব আবুল হোসেন বাজানদারের অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় চিকিৎসকরা এ অস্ত্রোপচার শুরু করেন। বিরল এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর বাজানের দেহে এটাই প্রথম অস্ত্রোপচার। প্রথম দফা তার বুড়ো আঙুল ও তর্জনীতে অস্ত্রোপচার হবে।
এ তথ্য জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালাম। তার নেতৃত্বেই চিকিৎসকদের একটি দল অস্ত্রোপচার করছে।
গত ৩০ জানুয়ারি আবুল হোসেন বাজানদার চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। জটিল এ রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। নানা পর্যবেক্ষণের পর অস্ত্রোপচারের এ দিন ঠিক করে মেডিকেল টিম।
বাংলামেইলে প্রথম বৃক্ষমানব আবুল হোসেন বাজানদারের সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে তা স্থানীয় ও বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান পায়। বৃক্ষমানবের সহায়তায় এগিয়ে আসেন বিত্তবানরা। তাদের সহায়তায় দেশে ও বিদেশে চিকিৎসাও করানো হয় এ রোগের। কিন্তু কাঙ্খিত কোনো ফল আসেনি।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন আবুল হোসেন বাজানদারকে খুলনার পাইকগাছার সরল গ্রাম থেকে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেন এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
বিরল এ রোগ আবুল বাজানদারের শরীরে বাসা বাধতে শুরু ২০০৫ সাল থেকে। বৃষ্টির বদ্ধ পানিতে ভ্যান চালাতে গিয়ে হাতে ও পায়ে আঁচিলের মত গোটা দেখা দেয়। পরে এ আঁচিলগুলো বড় হতে শুরু করে। একপর্যায়ে এ আঁচিল ভয়ঙ্কর আকার নেয়। ক’বছরের মধ্যে বাজানের দুই হাতের তালু, আঙ্গুল ও দুই পায়ের পাতায়, আঙ্গুলে গাছের শ্বাসমূলের মতো গজাতে থাকে।
পরবর্তীতে ৫ বছরে হাত ও পায়ের তালু, আঙ্গুলে শ্বাসমূল ভয়ঙ্কর রুপ নেয়। প্রচন্ড ব্যথায় কষ্ট বাড়তে থাকে আবুল বাজানদারের।
বিরল এই রোগে আক্রান্তের হাত ও পায়ে গাছের শিকড়ের মতো গজায়। এ কারণে আক্রান্ত রোগীকে ট্রি ম্যান বা বৃক্ষমানব বলা হয়। আবুল হোসেন বাজনদারসহ পৃথিবীতে এ পর্যন্ত এ ধরনের চারজন রোগীকে শনাক্ত করা গেছে। গণমাধ্যমে আসা ইন্দোনেশিয়ার বৃক্ষমানব মারা গেছেন গত বছরের ৩০ জানুয়ারি।