পরিবেশ রক্ষায় যত্রতত্র শিল্প-কারখানা স্থাপন রোধে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটা সুপারিশসহ ‘পজিশন পেপার’ উপস্থাপনের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে দায়িত্ব দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে দুই মন্ত্রণালয়কে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
বৈঠকে ‘যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা স্থাপনের ফলে পরিবেশগত ভারসাম্য বিনষ্ট সংক্রান্ত ১৯৯০ সালের ৩ জুন অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ১১(ঙ) নম্বর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অব্যাহতি প্রদান’ বিষয়ে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিশেষ একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা স্থাপন করার ফলে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার বিষয়ে ১৯৯০ সালে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প দাখিলের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সেটি দিয়েছিল সাধারণ অর্থনীতি বিভাগকে (জিইডি)। এখন গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রস্তাব নিয়ে এসেছে যে, দায়িত্ব যেহেতু গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছিল একনেকে সেটা চলে গেছে জিইডির কাছে, সুতরাং তাদের অব্যাহতি দিয়ে এটা জিইডিই করুক। মন্ত্রিসভায় সেটা এগ্রি করেনি, মন্ত্রিসভা বলেছে- যেহেতু এ বিষয়টির সঙ্গে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগ জড়িত, কারণ মাঠ পর্যায়ে জিইডি বা পরিকল্পনা কমিশনের কোনো অফিস নেই। তারা এটা মনিটরিং করতে পারবে না।
তিনি বলেন, এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ম্যাসিভ বিল্ডিং হচ্ছে, সেগুলো অনুমোদনের বিষয়টি দেখতে হবে। সেজন্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে অপরিকল্পিতভাবে যেন শিল্প স্থাপন না হয়, সে বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে যৌথভাবে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটা পজিশন পেপার উপস্থাপন করে সুপারিশসহ আবার কেবিনেটে আনতে হবে। যেন পরিবেশ বিনষ্ট না হয়। আমাদের যে ১০০টি বিনিয়োগ অঞ্চল করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সবার বিনিয়োগ যেন সেখানেই থাকে। সেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে। এ বিষয়ে উৎসাহিত করার জন্য প্রিসাইজ একটা রিকমান্ডেশন নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, জেলা-উপজেলায় ভবন নির্মাণে অনুমোদনের যে কর্তৃপক্ষ আছে, তাদের কাজকর্ম কেমন হচ্ছে, তাদের কাছে কী পরিমাণ ভবনের অনুমোদন হচ্ছে, কেন হচ্ছে না- এসব বিষয়ে প্রমোশন ক্যাম্পেইন করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, ছোট ছোট বাড়ি তো হচ্ছেই, কিছুক্ষেত্রে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিও হচ্ছে, অথচ তাদের কেউ অনুমোদনই নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে একটা প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনে করতে হবে। একইসঙ্গে এ দুটি মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে যত্রতত্র যেন শিল্প-কারখানা স্থাপন না হয়, কোথায় কীভাবে করা যায় সে বিষয়েও পজিশন পেপার উপস্থাপন করবে।
এএ