মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে শুরু হয়েছে মৌসুমের প্রথম চা পাতা উত্তোলন। প্রায় চার মাস পর নতুন চা তোলার ব্যস্ততা চলছে জেলার ৯১টি চা বাগানজুড়ে। মৌসুমের শুরুতে আগাম বৃষ্টিপাতে এবার চা উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন বাগান মালিকরা।
এ বিষয়ে খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছরই ডিসেম্বর-মার্চ পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে বন্ধ থাকে চা পাতা উত্তোলন। এ সময় চা গাছের কাটিং, সেচসহ বিভিন্ন পরিচর্যা করা হয়। এ সময় আগাম বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে। গাছে কুঁড়ি আসায় আগেভাগেই শুরু হয় উৎপাদন। আগাম ও পরিমিত বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
কমলগঞ্জের শ্রীগোবিন্দপুরসহ কয়েকটি চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, আগাম বৃষ্টিপাত এবং বাগান ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যার কারণে সবুজ হয়ে এসেছে প্রতিটি চায়ের টিলা। ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির পাশাপাশি চলছে নাচ-গান। শ্রমিকদের সঙ্গে বাগান ব্যবস্থাপকসহ অন্যরাও শামিল হচ্ছেন উৎসবে। তারা জানান, প্রতি বছরই নতুন পাতা চয়নের সময় চা বাগানে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। বাগানে পরিবেশিত হয় চা শ্রমিকদের ঐতিহ্যবাহী ঝুমুর ও কাঠি নৃত্য। পূজা-অর্চনা ও দোয়ার মাধ্যমে শুরু করা হয় নতুন পাতা উত্তোলন।
চা সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর করোনাকালেও চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। চা শিল্পের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছিল বাগানগুলোয়। সেই সুফল মেলে উৎপাদনে। তাছাড়া বাগান সম্প্রসারণ, নতুন করে বিনিয়োগ ও বাগান উন্নয়নে মালিকদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চা উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। বেড়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী জানান, চা শিল্পের উন্নয়নে উচ্চফলনশীল ও গুণগতমানের ১৮টি ক্লোন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা। উদ্ভাবিত এ ক্লোনগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। সব বাগানে পুরনো চা গাছ উঠিয়ে উচ্চফলনশীল ক্লোন চারা রোপণ আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো গেলে চায়ের উৎপাদন আরো বাড়বে।
সানবিডি/এনজে