মৌসুমের এটিই ছিল প্রথম শিলাবৃষ্টি। শিলাখণ্ডের আকারও ছিল বেশ বড়। এতে অনেক ভবনের কাচ ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে প্রকৃতির বরফ। কাচের ওপর শিলাখণ্ড পড়ে প্রচণ্ড আওয়াজ সৃষ্টি হয়। অনেকে ভয় পেয়ে যান। তবে উচ্ছ্বাসও কম ছিল না নগরবাসীর। জানালা দিয়ে কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে শিলাখণ্ড ধরেছেন। কেউ কেউ জমে থাকা প্রকৃতির বরফ হাতে নিয়ে খেলেছেন।
১০ মিনিটের এ শিলাবৃষ্টিতে নগরের বেশ কয়েকটি সড়কে পানি জমে যায়। এতে পথচারী ও যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও যানজট লেগে যায়। কর্মব্যস্ত ঢাকার রাজপথে বেসামাল পথচারীরা তখন মাথার ওপর একটুখানি ছাউনি খুঁজতে ছোটাছুটি করছেন। কেউ কেউ তো ভিজে সারা।
৯০ বছর বয়সের বৃদ্ধ আব্দুল মতিন পল্টন টাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, আমার ৯০ বছর বয়সে অনেক ঝড়-তুফান দেখেছি, শীলা ঝড়ও দেখেছি। কিন্তু আজকের এ দৃশ্য আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমন দৃশ্য এর আগে কখনো দেখিনি। তিনি বলেন, এটা অাল্লাহর তালায়ার পক্ষ থেকে এক প্রকারের গজব বলতে পারেন। তার লীলা আমাদের মতো সাধারন মানুষের পক্ষে বুঝা সম্ভব নয়। এর থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তিনি হয়তো এর মাধ্যমে আমাদের বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে সাবধান করেছেন। তিনি এরকম আরো অনেক কিছু বলেই চলেছেন।
ঝড়ো হাওয়া আর শিলাবৃষ্টির খানিক পরই হঠাৎ করেই আকাশে হেসে ওঠে সূর্য। ঝলমলে আলো দেখে বোঝারই উপায় নেই, একটু আগেই কেমন সেজেছিল প্রকৃতি!
জানা গেছে, এবার ফাল্গুন এসেছে উষ্ণতা নিয়ে। শীতের দুয়ারে ঝুপ করে ঝাপ ফেলে কয়েক দিন ধরেই মৃদু লু হাওয়া বইছিল। আজকের হঠাৎ বৃষ্টি এতে শীতল পরশ নিয়ে এল। ভোররাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাঙামাটিতে ৬১ এবং মাদারীপুরে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা, ফেনী, শ্রীমঙ্গল, গোপালগঞ্জ, খুলনায়ও বৃষ্টি হয়েছে বেশ।