দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েকদিন ধরেই প্রতিকূল আবহাওয়া। ১১শ টাকা মজুরিতেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। চাহিদা বেশি থাকায় হারভেস্টার মেশিনও অমিল। বৈশাখে রোজ ঝড়-বৃষ্টির চোখ রাঙানিতে তাই ধান তোলা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের।
জানা গেছে, শুধু উত্তরাঞ্চল নয়, দেশে বোরো মৌসুমের ধান কাটার শ্রমিক সংকট প্রতি বছরই তীব্রতর হচ্ছে। আর সংকটের কারণে বাড়ছে মজুরিও। গত পাঁচ বছরে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের তথ্য অনুযায়ী, একদিনে ১১শ থেকে হাজার টাকার নিচে শ্রমিক মিলছে না। বেশি মজুরিতে এসব শ্রমিক নিয়ে পরে লোকসানে পড়ছে কৃষক।
উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার কৃষকরা জানিয়েছেন, মাঠের ধান কাটার জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত। চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদও ভালো হয়েছে। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে বুধবার থেকে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। তাই পাকা ধান জমিতে নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা।
এ বিষয়ে কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বোরো মৌসুমে দেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ একর জমির ধান কাটতে হয়। এ বিশাল পরিমাণে জমির ধান কাটতে যত সংখ্যক শ্রমিক প্রয়োজন তার অনুপাতে ৪০ শতাংশ কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। সে চাহিদা পূরণে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের প্রয়োজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ধান কাটার যন্ত্রের প্রয়োজন সেটার মাত্র পাঁচ শতাংশ রয়েছে দেশের কৃষকদের কাছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সৈয়দ মো. রফিকুল আমিন বলেন, কিছু এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কায় একসঙ্গে সবাই ধান কাটছে। এসব এলাকায় শ্রমিক সংকট হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার দীর্ঘ মেয়াদে এ সংকট সমাধানে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প নিয়েছে। কৃষকদের অর্ধেক দামে হারভেস্টার দেওয়া হচ্ছে। এভাবে একসময় অধিকাংশ জমি যন্ত্রের আওতায় আসবে।
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকও গত কয়েক বছর ধান কাটার উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন। তিনি ভবিষ্যতে সমালয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের বিষয়ে আগ্রহী। কারণ সারাদেশের বিভিন্ন মাঠে ছোট ছোট মালিকানার জমিতে নানান জাতের ধানের চাষ হচ্ছে। ফলে একই সময় সেখানে বড় হারভেস্টারে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। সমালয় পদ্ধতিতে পুরো মাঠে একসঙ্গে বীজ বপন, চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান কেটে গোলায় তোলা- সবই হবে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে। এতে শ্রমিকনির্ভরতার পাশাপাশি কমবে চাষির ব্যয়।
সানবিডি/এনজে