টানা ভারী বৃষ্টিপাত আর বাতাসে ধান নিয়ে দারুন বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় কোথাও পাকা ধান নুয়ে পড়েছে, কোথাও আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। এমন অবস্থায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। আবার শ্রমিক পাওয়া গেলেও অর্ধেক ধান দিতে হচ্ছে তাদের। শেষ মুহূর্তে এসে কৃষকরা এখন দিশেহারা।
জেলার সদর, পার্বতীপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলায় দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টি আর বাতাসে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা পাকা ধান মাটিতে পড়ে ও পানিতে তলিয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও ধান কেটে বেঁধে জমিতে রাখার পর এখন বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। অনেকে আবার আধা পাকা ধান এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে কেটে ফেলছেন। এতে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, গত মৌসুমে ইরি-বোরো বিঘাপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মণ করে হলেও এবার বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মণ ফলন হয়েছে। এদিকে শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক জমির অর্ধেক ধান শ্রমিকদের মজুরি দিতেই চলে যাচ্ছে। তবু সময়মতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ লাখ ৭৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে ৭ লাখ ২৯ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত হয় ৭ লাখ ৩১ হাজার ১৭৩ মেট্রিক টন এবং ২০২০-২১ মৌসুমে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ৭ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, দখিনা বাতাসের সঙ্গে পশ্চিমা লঘু চাপের সংমিশ্রণের কারণে আকাশে প্রচুর মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। এটি হিমালয় পর্বমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আবার ছড়িয়ে পড়ছে। এ জন্য আকাশ সব সময় মেঘলা থাকছে।
আগামী পাঁচ-সাত দিন এ ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই। তবে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস বইতে পারে।
সানবিডি/এনজে