আমেরিকার ভবিষ্যত কর্ণধার হিসাবে রিপাবলিকান প্রার্থী ও বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ এগিয়ে। তাকে নিয়ে মানুষের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে তার থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই মেলানিয়া। এই সাবেক স্লোভেনিয়ান সুপারডেলকে সবাই মিসেস ট্রাম্প বলেই চেনেন। যদি ডোনাল্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন, তবে হোয়াইট হাউজে প্রথমবারের মতো এমন সেক্সি ও গ্ল্যামারাস ফার্স্ট লেডির পদার্পন ঘটবে।
মেলানিয়া ট্রাম্পের বয়স পঁয়তাল্লিশ বছর। ২০০৫ সালে সুপারমডেলকে বিয়ে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বয়সে স্বামীর চেয়ে তিনি ২৪ বছরের ছোট। তাকে নিয়ে আমেরিকানদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। সম্প্রতি বিলাসবহুল ট্রাম্প টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে মেলানিয়ার তোলা একটি ছবি প্রকাশ পেতে তাকে নিয়ে আলোচনার ঝড় আরো তীব্র হয়েছে।
ম্যানহাটানের ৬৮ তলা ট্রাম্প টাওয়ারের শেষ তিনটি ফ্লোর নিয়ে ট্রাম্প পরিবারের বিলাসী জীবন। এটা প্যালেস অব ভার্সাটাইলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় এটি। ২৪ ক্যারেট গোল্ড আর হীরাখচিত মার্বেল পাথরের মেঝে আর দেয়াল যেন ঝকঝকে আয়না। এ ছাড়া নিউ ইয়র্কের বাইরে বেডফোর্ডের কাছেই এক দানবীয় ম্যানসন সেভেন স্প্রিংয়ের মালিকও তিনি। ২৩০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা ম্যানশনে রয়েছে ৬০টি কক্ষ, ২টি সার্ভেন্ট উইংগস, ১৫টি শয়নকক্ষ এবং ৩টি সুইমিং পুল।
ভার্জিনিয়ার গ্রামাঞ্চলে আরো একটি ম্যানশন রয়েছে তার। বেভারলি হিলসে আছে আরেকটি বিশাল বাড়ি। ফ্লোরিডার পাম বিচে রয়েছে মার-আ-লাগো।
স্বামী এই অতি বিলাসীতায় একটুও অস্বস্তি নেই মেলনিয়ার। তিনি নিয়মতি তার প্রাচুর্যপূর্ণ জীবনের ছবি দিয়ে যান সোশাল মিডিয়ায়। স্বামীকে দারুণ ভালোবাসেন। কথায় এখনো পূর্ব উইরোপীয়ান টান রয়েছে। ডোনাল্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, তার মনটা সত্যিই বিস্ময়কর।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে ডোনাল্ডের সাফল্য দেখার মতো। আবার সাবেক ইয়োগোস্লোভিয়ার কমিউনিস্ট প্রবেশ থেকে বেরিয়ে আসা এক নারীর মার্কিন ফার্স্ট লেডি হওয়ার সম্ভাবনাও মেলানিয়ার জন্যে কম সাফল্যের নয়। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিদেশিনী আমেরিকা এসে ডোনাল্ডের তৃতীয় স্ত্রী হয়েছেন। আর ইমিগ্রেন্ট হিসাবে দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন ফার্স্ট লেডি হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট জন কুইঞ্চি অ্যাডামসের স্ত্রী ছিলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত লুইজা অ্যাডামস।
মার্কিন ইতিহাসের সকল ফার্স্ট লেডিদের দুটো ধরণ দেখা যায়। এদের একটি দল ভদ্রোচিতভাবে কেমন ফার্স্ট লেডির জীবনটা উপভোগ করেন। আরকেটা শ্রেণি সত্যিকার অর্থেই সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
মেলানিয়াকে নিয়ে গুঞ্জন যখন তুঙ্গে, তখন ট্রাম্প খোলাসা করে বললেন যে, তিনি সুপারমডেলকে তার চেহারা দেখেই বিয়ে করেছেন। মস্তিষ্কের জন্যে নয়। তবে মস্তিষ্কের ব্যবহারেও কম যান না। যেমন- আমেরিকায় আর মুসলমানদের ঢুকতে দেওয়া হবে না- ট্রাম্পের এমন বিতর্কিত মন্তব্যের বিপরীতে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন মিসেস ট্রাম্প। তিনি স্বামীর বক্তব্যকে সুমিষ্ট করতে বলেন, তিনি (ডোনাল্ড) আসলে আমেরিকার জনগণকে সুরক্ষার কথা বলেছেন। পৃথিবীতে যা ঘটে চলেছে তা সত্যিই ভয়ঙ্কর।
একবার মেলানিয়ার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলো, আপনাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের একটা গোপনীয়তা প্রকাশ করুন। তিন হাসি মুখে বললেন, আমরা দুজনই পৃথক বাথরুম ব্যবহার করি।
এ ছাড়া ফার্স্ট লেডি হওয়ার পর তার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়। এসব কথা এড়িয়ে যান তিনি। বরং নিজের ৯ বছর বয়সী ছেলে ব্যারনের কথা বলতেই বেশি পছন্দ করেন। ছেলেকে সামলাতে তার কোনো গভর্নেস পর্যন্ত নেই তার। তবে বাড়িতে একজন শেফ রয়েছে বলে জানান। বিলাসী জীবনে মেলানিয়া এসেছেন কমিউনিস্ট আমলের ইয়োগোস্লোভিয়ার একটি স্বচ্ছল পরিবার থেকে। তার বাবা গাড়ির ডিলার ছিলেন। বড় হয়েছে সেভনিকায়। পরিবারসহ অস্ট্রিয়ায় চলে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সম্পদ তাদের ছিল।
১৭ বছর বয়সে ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার মেলানিয়া চোখে পড়েন এক ফটোগ্রাফারের। তিনি লাস্যময়ীকে মডেলিংয়ের প্রস্তাব দেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে দুয়ার খুলে যায় তার। মিলানের একটি মডেলিং এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। তিনি হেলমুট নিউটন এবং মারিও টেস্টিনোর মতো বিখ্যাত ফটোগ্রাফারদের সামনে দাঁড়িয়েছেন। ১৯৯৬ সালে নিউ ইয়র্কে চলে আসেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি পার্টিতে দেখা হয় তার। তখন মেলানিয়া ২৮ বছরের তরুণি, আর ট্রাম্পের বয়স ৫২।
ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ইভানা। তিনি ছিলেন চেক বংশোদ্ভুত। ২০০৫ সালে মেলানিয়াকে পাম বিচে বিয়ে করেন ট্রাম্প। সেখানে মেলানিয়া পরেছিলেন ১ লাখ ডলারের ডিওরের পোশাক। বন্ধুরা বলেন, মেলানিয়া দারুণ এক নারী। স্বামীকে নিয়ে দারুণ সুখী তিনি। একদিন হয়তো তারা আরো বেশি কিছু করতে পারবেন দুজনের জন্যে। সূত্র : ডেইলি মেইল
সানবিডি/ঢাকা/আহো