বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এরা নিজেদের স্বাধীন সত্তাকে ভুলে গিয়ে সরকারের ইচ্ছা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইসির বিরুদ্ধেই এ অভিযোগ তোলেন। এর আগে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম ও সহ দপ্তর সম্পাদক তায়েবুল ইসলাম।
তিনি সাংবাদকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের একটি স্বাধীন স্বত্তা আছে। সাংবিধানিক আলাদা একটি কর্তৃত্ব আছে। কিন্তু তারা নিজেদের স্বাধীন স্বত্তাকে বিলীন করে দিয়েছে। ইসি এখন নির্বাহী বিভাগের যে ইচ্ছা তা পালনের জন্য তারা কাজ করছে। এই নির্বাচন কমিশন আসলে আজ্ঞাবহ। এর কোনো মেরুদণ্ড নেই। সরকারের যত বেআইনি ইচ্ছা, সরকারের একচেটিয়াভাবে সবকিছু দখল করে নেয়ার যে ইচ্ছাকে সিল মোহর দেয়ার জন্য কাজ করছে ইসি।’
রিজভী বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর যত ঘটনা ঘটেছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র চিঠি আকারে ইসিতে জমা দিয়ে গেলাম। যদিও ইসি কোনো পদক্ষেপ নেয় না, তবুও দলিল রাখার জন্য এই অভিযোগ।’
তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করা, মনোনয়ণপত্র জমা না দেয়ার জন্য হুমকি ধামকি দেয়া, বাসা-বাড়িতে, পথে ঘাটে এবং নির্বাচনী কার্যালয়েও সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করছে শাসক দলের ক্যাডাররা।
বিভিন্ন সংঘাতের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ণপত্র দাখিকে মনোনয়নপত্র প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়া হচ্ছে না। প্রার্থী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট করা হচ্ছে, এমনকি বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেয়ার কারণে নির্বাচনী কার্যালয়েও হামলা করেছে শাসক দলের সন্ত্রাসী বাহিনী। পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ঠুনকো অভিযোগে বিএনপির বেশ কিছু প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন।’ এই তালিকা পরবর্তী ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা বিএনপির।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপের ৭৩৮ ইউপির মধ্যে ১৪০টিতে বিএনপির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছে না। অথচ আওয়ামী মনোনিত ৫১ জন প্রার্থী ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করার মূখ্য লক্ষ্য নিয়েই নির্বাচনী কর্মকর্তা, জনপ্রশাসন এবং সন্ত্রাসী ক্যাডারদের যৌথ উদ্যোগে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
ভোটার বিহীন এক তরফা নির্বাচন করে শাসক দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের এক চেটিয়া বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য একদিকে প্রকাশ্য হুমকি আতঙ্ক সৃষ্টি করে সন্ত্রাসের বিস্তার করা হচ্ছে। অন্যদিকে শাসক দলের ইচ্ছা পূরণের জন্য নির্বাচনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও আঁকাবাঁকা কর্মকাণ্ড অব্যহত রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করার কথা, সেখানে কমিশনের কর্মকর্তাদের আচরণ পক্ষপাত দুষ্ট এবং নিঃসন্দেহে দূরভীসন্ধিমূলক বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস