আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দলের জাতীয় সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ইশতেহার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আমরা সেটা ভুলে যাই না। প্রতিবার বাজেট ঘোষণার সময় ইশতেহার হাতে নিয়ে কতটুকু অর্জন করতে পারলাম, কতটুকু আমাদের সামনে করতে হবে, সেগুলো বিবেচনা করে সেভাবেই বাজেট করি।
বুধবার (১ জুন) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ১৫ আগস্টের শহীদ ও প্রয়াত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় তাদের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তৃণমূল থেকে উন্নয়ন করেছি। আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। পদ্মা সেতু একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সততা ছিল বলেই এই চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছি, নিজের অর্থে সেই সেতু করেছি। ২৫ জুন উদ্বোধন করব ইনশাল্লাহ। কানাডা কোর্ট রায়ে বলেছে পদ্মা সেতু নিয়ে সব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা। ড. ইউনুস এটা করেছে শুধু গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদের জন্য। ৭১ বছর বয়স পর্যন্ত ড. ইউনূস বেআইনিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থেকেছে। এ নিয়ে মামলা করে সে হেরে যায়। বিশ্বব্যাংক তার কথায় ফান্ড বন্ধ করে দেয়। পরে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করি। দেশের ৯০ ভাগ উন্নয়ন নিজস্ব অর্থায়নে করছি। বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থা দুঃখজনক ছিল। কারণ, ক্ষমতা তো জনগণের হাতে ছিল না। ক্ষমতা চলে গিয়েছিল সেই মিলিটারি ডিকটেটরদের হাতে। উর্দি পরে ক্ষমতা দখল করতো। যার ফলে দেশের উন্নয়ন না হয়ে তারা তাদের উন্নয়ন করেছে। ১৯/২০টা ক্যু হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল, সেশন জট ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন হয়। তিন বছরের কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বর মাসেই। গত দুইবারের মতো এবারও নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন করতে চায় দলটি। তারই অংশ হিসাবে তৃণমূলের মেয়াদোত্তীর্ণ শাখাগুলোর সম্মেলন করছে তারা।
এর আগে বিকেলে ৪টার দিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর এটাই এককভাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভা।
এর আগে ২০২০ সালে ৩ ও ৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যৌথ সভা হয়েছিল। এরপর মহামারি করোনার কারণে প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও উপদেষ্টা পরিষদের আলাদা কোনো সভা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করা হয়। জাতীয় সম্মেলনের পর একেএম রহমত উল্লাহ এমপি, হাজি আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, জয়নাল হাজারীসহ কয়েকজনকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছিল।
কিন্তু এর মধ্যে হাজি আবুল হাসনাত ও জয়নাল হাজারী মারা গেছেন। এ ছাড়া এই সময়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত, এইচটি ইমামসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মারা গেছেন। ফলে উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকটি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। এদিকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
এএ