বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বাতিল হওয়া আগের পদ্ধতিতেই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। শ্রমবাজার খুলতে দেশটি শর্ত মেনে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের প্রায় ছয় মাস পর সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সির 'সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ সিন্ডিকেটের বিষয়টি সরাসরি স্বীকার না করে বলেছেন, সব বৈধ এজেন্সির তালিকা পাঠাবে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া যাদের বাছাই করবে, সেসব এজেন্সিই কর্মী পাঠাবে। তবে জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এই বাছাইয়ের মাধ্যমেই সিন্ডিকেট হবে। ২০১৫ সালে যেমন হয়েছিল।
কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ হবে, তা নির্ধারণে বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রবাসীকল্যাণ ভবনে দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠক হয়। মালয়েশিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভান। সারাভান বাংলাদেশে আসার আগে বুধবার রাতে হুঁশিয়ার করে বলেন, যেসব এজেন্সি মালয়েশিয়ার শর্ত না মেনে কর্মী পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে, তাদের নিষিদ্ধ করবে তাঁর দেশ। বৈঠকের পর হোটেলে ফিরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'কত সংখ্যক এজেন্সি, কোন কোন এজেন্সি কর্মী পাঠাবে- তা বাংলাদেশের ভাবার বিষয় নয়। মালয়েশিয়া তা ঠিক করবে, যা মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেবে।'
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মন্ত্রীও বলেন, এজেন্সি বাছাই মালয়েশিয়ার ব্যাপার। কত সংখ্যক এজেন্সি কর্মী পাঠানোর কাজ পাবে, তা নিয়ে জেডব্লিউজির বৈঠকে আলোচনা হয়নি। সমঝোতা স্মারকের শর্ত অনুযায়ী, বৈধ লাইসেন্সধারী ১ হাজার ৫২০ এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়ায় পাঠাবে বাংলাদেশ। দেশটির মন্ত্রিসভা তালিকা থেকে এজেন্সি বাছাই করে তাদের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করবে। কর্মীদের নূ্যনতম বেতন হবে দেড় হাজার রিঙ্গিত বা প্রায় ৩০ হাজার টাকা। শ্রম আইন অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা পাবেন কর্মীরা। এক বছরে দুই লাখ কর্মী যাবেন। সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ পাঁচ বছর।
মন্ত্রী বলেছেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার খরচ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার কম হবে। কর্মীর আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়া দেবে মালয়েশিয়ার নিয়োগকারী। কর্মী বাংলাদেশ অংশের খরচ দেবে। এর মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সরকারি বিভিন্ন ফি এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ। সার্ভিস চার্জ কত হবে, তা নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়। বেশি টাকা নিলে এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হবে। মন্ত্রণালয়ের তালিকা থেকে মেডিকেল সেন্টার বাছাই করবে মালয়েশিয়া।
বাংলাদেশ ছাড়াও ১৩টি দেশ থেকে কর্মী নেয় মালয়েশিয়া। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে তারা এজেন্সি বাছাই করে না। কর্মী প্রেরণকারী দেশ তা ঠিক করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কেন ভিন্ন নিয়ম- এ প্রশ্নে ইমরান আহমদ বলেছেন, অন্য দেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কী চুক্তি রয়েছে, তা জানা নেই। সব দেশের ক্ষেত্রে চুক্তি আলাদা।
সানবিডি/এনজে