এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকতে শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। ব্যাট হাতে সাব্বির রহমানের ঝড়ের পর টাইগার বোলাররা কাজটি ভালোভাবেই করেছেন। বাঁচা-মরার এই ম্যাচে লংকান সিংহদের ২৩ রানে হারিয়ে ফাইনালে খেলার স্বপ্ন জিইয়ে রাখল রয়েল বেঙ্গল টাইগাররা।
হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে টপ অর্ডারের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে বেকায়দায় পড়ে বাংলাদেশ। কোনো রান না করে সাজঘরে ফিরেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকার। সাব্বির রহমানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে মুশফিকুর রহিম (৪) রান আউট হয়ে ফিরলে ম্যাচ নিয়ে শংকায় পড়ে যায় টাইগাররা।
ওই অবস্থা থেকে একাই লড়াই চালিয়ে দলকে লড়াকু স্কোর এনে দেন সাব্বির। তিনি ৩ ছক্কা ও ১০ চারে ৫৪ বলে ৮০ রান করেন। তাকে সঙ্গ দেয়া সাকিব আল হাসান করেন ৩২ রান। শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ১২ বলে ২৩ রানের সুবাদে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান তুলতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।
লংকান বোলার দুশমন্ত চামিরা ৩টি উইকেট তুলে নেন। তবে এর জন্য তাকে ৩০ রান খরচ করতে হয়। এছাড়া অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউস ও নুয়ান কুলাসেকারা ১টি করে উইকেট নেন। এরপর ১৪৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে লংকান ব্যাটসম্যান তিলকারত্ন দিলশান ও দিনেশ চান্ডিমাল দেখেশুনেই খেলছিলেন। তবে প্রথম ওভারেই তাদের জুটির ভীত নাড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ।
ওভারের দ্বিতীয় বলেই চান্ডিমালকে ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেন তাসকিন। কিন্তু স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সৌম্য ক্যাচ ছেড়ে দিলে সুযোগটা মিস হয়ে যায়। তবে চতুর্থ ওভারে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরে দিলশানকে ফেরান সেই সৌম্যই। অনেক দূর দৌঁড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাকিবের বলে ওঠা ওই ক্যাচ ধরেন তিনি। ক্রমেই হুমকি হয়ে ওঠা দিলশান ফেরেন ১২ রানে।
এর পর চান্ডিমালকে সঙ্গ দিতে নামেন সিহান জয়সুরিয়া। এই দুই ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিয়ে খেলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান মাহমুদুল্লাহ। তিনি ৩৭ রানে ফেরান চান্ডিমালকে। পরে সাকিব ফেরান জয়সুরিয়াকে। তিনি ২৬ রান করে ফেরেন।
লংকান ইনিংস শেষ করার যেন দায়িত্ব নেন 'কাটার মাস্টার' মুস্তাফিজুর রহমান। ফেরান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরাকে। আর লংকান ইনিংসের শেষ খুঁটি ম্যাথিউসকে ফেরান আল-আমিন হোসেন।
এর পর কেবল লংকান ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। মুস্তাফিজ আর আল-আমিনের জাদুতে ২৩ রান দূরে থাকতেই থেমে যায় ৮ উইকেট খোয়ানো শ্রীলংকার ইনিংস। আল-আমিন ৩৪ রান খরচে তুলে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া সাকিব নেন ২ উইকেট। আর সবচেয়ে কম খরচে স্পেল করে নিজেকে সেরাদের তালিকায় নিয়ে গেছেন মুস্তাফিজ।
ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান সাব্বির রহমান। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেও শ্রীলংকা ও আরব আমিরাতকে হারিয়ে তিন ম্যাচের দুটিতে জয় তুলে নিল মাশরাফি বাহিনী।