২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটে আয় খাত ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ হার গত বাজেটে ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে এ ঘাটতি মেটানো হবে।
ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যে ঋণ নেওয়া হবে তার মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা নেওয়া হবে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৬৮ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৩৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। ব্যাংক বহির্ভূত ঋণ ধরা হচ্ছে ৪০ হাজার ১ কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং ৫ হাজার ১ কোটি টাকা অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের এ ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, যার মধ্য থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে। ফলে প্রকৃত বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
এবারের বাজেটের আকার যেমন বড়, তেমনি এ বাজেটে ঘাটতিও ধরা হচ্ছে বড়। অনুদান বাদে এই বাজেটের ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশের সমান। আর অনুদানসহ বাজেট ঘাটতির পরিমাণ হবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের সমান।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ১১ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। আবর্তক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ২৪২ কোটি টাকা, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৭৩ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। মূলধন ব্যয় ধরা হচ্ছে ৩৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। খাদ্য হিসেবে ৫৪০ কোটি টাকা এবং ঋণ ও অগ্রিম ব্যয় ধরা হচ্ছে ৬ হাজার ৫০১ কোটি টাকা।
অপরদিকে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে ৭ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্কিম বাবদ ৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য সর্মসূচির জন্য ২ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসব ব্যয়ের বিপরীতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। রাজস্ব সংগ্রহের গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তার মধ্যে কর ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর ১৮ হাজার কোটি টাকা। কর ব্যতীত আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
কোভিড-১৯ অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এবারের বাজেটের আকার যেমন বড়, তেমনি এ বাজেটে ঘাটতিও ধরা হয়েছে বড়। অনুদান বাদে এই বাজেটের ঘাটতি দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশের সমান। আর অনুদানসহ বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের সমান।
এটি বর্তমান সরকারের ২৩তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান, শিক্ষাসহ বেশকিছু খাতকে।
এএ