বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে বিভিন্নভাবে সহায়তা করায় অনেক এগিয়েছে পোশাক শিল্প খাত। একইভাবে কৃষি খাতে উন্নয়নে পোশাক খাতের নগদ প্রণোদনা ডাইভারশন করে কৃষিখাতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। শনিবার রাজধানীর উত্তরায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় আহসান গ্রুপের অন্যতম অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উদ্যোগে আয়োজিত এগ্রো সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান শহিদুল আহসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এমপি, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) ডিজি ড. তালুকদার নূরুন্নাহার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন ড. এস ডি চৌধুরী, প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান, এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কনস্যুলেট মারিলৌ কনটোস ওয়ারেন্সসহ এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমরা আমদানি নির্ভর ছিলাম। সময়ের ব্যবধানে বর্তমান নিজের চাহিদা পূরণ করে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য রফতানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এটিই তার বাস্তব প্রমাণ। আহসান গ্রুপের মতো দেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হিসেবে বিরাট ভূমিকা পালন করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
১৯৭২ সালে দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিল। তখন মানুষ অনাহারে থাকতো। সময়ের ব্যবধানে সেই একই আয়াতনের দেশের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি। তারপরেও দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন দেশের কোনো মানুষ অনাহারে থাকে না। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ১৯৬টি দেশে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি করছে।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৪ বছরে আমাদের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তা সত্ত্বেও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। আমাদের কৃষিক্ষেত্রেও অর্জিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তিনি বলেন বর্তমানে হারে জনসংখ্যা বাড়লে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ আমাদের জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই মানুষের প্রোটিন বা আমিষ সরবরাহের প্রধানতম উৎস মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের সংস্থানের জন্য দেশের পোল্ট্রি খাতে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে।
ফলে ৫ বছর আগে যেখানে বাংলাদেশে পোল্ট্রি খামারের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ লাখ। সরকার মনে করে পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও আমাদের পোল্ট্রি সামগ্রী রফতানি সম্ভব হবে। এজন্য সরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি খামারি ও পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নানামুখী সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করছে। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই দেশের বৃহত্তর খাত হিসেবে পোল্ট্রি শিল্প আত্মপ্রকাশ করবে। ২০২১ সালের মধ্যে এই শিল্পে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পোল্ট্রি খামার জেলা, উপজেলা থেকে ছড়িয়ে ইউনিয়ন থেকে গ্রামপর্যায়ে চলে যাবে।
সরকারের সহযোগিতার প্রশস্ত হাতের সঙ্গে মিলিয়ে আমি আশা করি এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আমিষের ঘাটতি পূরণে এবং বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে পোল্ট্রি শিল্পের প্রসারে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবে। এজি এগ্রো ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেড দেশের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উৎপাদন পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং রফতানি আয়ের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য আনবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।