দেশে প্রতিবছর কোরবানি এলে ব্যাংকগুলো কাঁচা চামড়া কিনতে চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাংকগুলো সেই ঋণের টাকা ফেরত পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, এ পর্যন্ত চামড়া খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আগের দেওয়া ঋণ খেলাপি হলেও ঋণ পাবেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিল করা যাবে। অর্থাৎ, ঋণ খেলাপিরাও ঋণ পাবেন।
আগামী ১০ জুলাই ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর দেশে উৎপাদিত কাঁচা চামড়ার প্রায় অর্ধেকের বেশি আসে ঈদুল আজহায় কোরবানি করা পশু থেকে।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির চামড়ার কদরও কমে গেছে। তবে এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে একটু বাড়তে পারে। এদিকে আসন্ন ঈদুল আজহায় কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে ট্যানাররা ৪০০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ পাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ঋণ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। তবে এবারের কোরবানি ঈদে পশুর কাঁচা চামড়া কিনতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব চারটি ব্যাংক।
ব্যাংকাররা বলছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের চাহিদা মতো তহবিল জোগান দিতে নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা বুঝে-শুনেই ঋণ দেবেন।
ট্যানারি শিল্প উদ্যোক্তাদের আগের ঋণের বড় একটি অংশই খেলাপি থাকায় ব্যাংকগুলো সহজে ঋণ দিতে চায় না, যার কারণে ঋণ পেতে সরকারের সহায়তা চান তারা।
ব্যাংক ঋণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক এবং সালমা ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া একটি পচনশীল পণ্য, যা দ্রুত সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হয়। এই চামড়া সংরক্ষণ করতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে না। সংগৃহীত চামড়া নগদ টাকা দিয়ে কিনতে হয়, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা আড়তে চামড়া দিয়ে যান নগদ টাকার বিনিময়ে। তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকরা নিজস্ব ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে ব্যবসা করলেও কোরবানির সময় বেশি নগদ অর্থের প্রয়োজন হয়, যা নিজস্ব ফান্ড থেকে ম্যানেজ করা সম্ভব হয় না।
এর আগে, কোরবানির ঈদে চামড়া সংগ্রহের জন্য ট্যানারি শিল্পের অনুকূলে ৫০০-৬০০ কোটি টাকা ঋণ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় ট্যানারি মালিকরা।
অবশ্য গত বছর ঈদুল আজহাতে কাঁচা চামড়া কিনতে ৫৮৩ কোটি টাকার তহবিল জোগান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। যেখানে রাষ্ট্রীয় খাতের চার ব্যাংক ঋণ দিয়েছিল ৩৯০ কোটি টাকা। আর এবার এই চার ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ৩০০ কোটি।
এনজে