সিলেটের ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ফয়সাল আহমদকে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। গত ১ জুলাই কলকাতা পুলিশের বিশেষ শাখা স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) একটি দল দণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাস। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাস বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
পরে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ এবং ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
পরে গত ৩০ মার্চ সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল অনন্ত খুনের মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।
কলকাতা পুলিশ বলছে, গত জুনের শুরুর দিকে ফয়সাল ভারতে অবস্থান করছেন বলে খোঁজ পান বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে সেখানে ব্যবহার করা তাঁর একটি মোবাইল নম্বরও কলকাতা পুলিশকে দেওয়া হয়। পরে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) সদস্যরা মোবাইল ট্র্যাক করে বেঙ্গালুরুতে ফয়সালের অবস্থান নিশ্চিত হন।
গত ১ জুলাই বেঙ্গালুরুর বোম্মনাহাল্লি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ জুলাই তাঁকে কলকাতায় আনা হয়। ফয়সালের কাছে যে পাসপোর্ট মিলেছে, সেখানে রয়েছে কাছাড়-ঘেঁষা মিজোরামের ঠিকানা। ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় করেছেন বেঙ্গালুরু থেকে। ভোটার কার্ড শিলচরের। সেখানে তাঁর পরিচয় শাহিদ মজুমদার।
এম জি