কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এসংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
সংস্কৃতিসচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসাদ উদ্দিন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান।
কাজী নজরুল ইসলামের ‘জাতীয় কবি’ স্বীকৃতির গেজেট চেয়ে গত ৩১ মে বিবাদীদের আইনি নোটিশ পাঠান আসাদ উদ্দিনসহ সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় গত ২২ জুন গেজেট প্রকাশের নির্দশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তারা।
রিট আবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে বাংলাদেশে আনা হয়। পরে বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কবিকে ধানমণ্ডিতে একটি বাড়িও দেওয়া হয়। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। এরপর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে সরকারি আদেশ জারি করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ‘একুশে পদক' দেওয়া হয়। সব কিছুরই ছবি, তথ্যসহ লিখিত দলিল থাকলেও 'জাতীয় কবি' হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির কোনো দলিল বা প্রমাণ নেই।
রিটে আরো বলা হয়েছে, ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার আলবার্ট হলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে সর্বভারতীয় বাঙালিদের পক্ষ থেকে কবিকে জাতীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নজরুলকে 'জাতীয় কবি' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে মুখে মুখে তিনি জাতীয় কবি হয়ে আছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে তাঁকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে কোনো প্রজ্ঞাপন বা গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কোনো মৌখিক বিষয় নয়।
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন বলেন, 'নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা দিতে গবেষক ও কবি পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাই দেশের সচেতন একজন নাগরিক এবং উচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে এই রিট আবেদনটি করা হয়েছে। '
এএ