এবছর ৩ হাজার বাংলাদেশি ইতালি যেতে পারবেন: রাষ্ট্রদূত
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৭-২২ ১৮:২৪:০২
শ্রমবাজার গতিশীল করতে দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার তিন হাজার শ্রমিক বৈধ উপায়ে ইতালি যেতে পারবে। ভবিষ্যতে এই কোটা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালিয়ান রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াতা।
শুক্রবার (২২ জুলাই) শরীয়তপুর পৌরসভা মিলনায়তনে মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন উৎসাহিত করতে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ইতালিয়ান রাষ্ট্রদূত।
এ সময় এনরিকো বলেন, ‘২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতালি সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইতালিতে নির্দিষ্ট মৌসুমে এবং অন্যান্য সময়ে শ্রমিক পাঠানোর কোটাভিত্তিক সুবিধা লাভ করে। এরপর গত দুই বছরে ১ হাজার ৬০০ শ্রমিক বৈধ উপায়ে ইতালিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমানে আরও তিন হাজার বাংলাদেশি বৈধ ভিসা পেতে যাচ্ছে। এখন থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ইতালি যাওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত থাকবে।’
এ ছাড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপজ্জনক পথে বিদেশ যাওয়া সবার জন্য উদ্বেগজনক উল্লেখ করে মানব পাচার রোধে জনসেচতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন এনরিকো।
২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পথে ২১ হাজার ৮৪৮ অনিয়মিত অভিবাসী ইতালিতে প্রবেশ করে, যা গত বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি।
আরও জানা গেছে, ২০২২ সালে ১৪ হাজার ৭৫৮ জন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমায়। এর মধ্যে ইতালিতে প্রবেশ করে ৬ হাজার ৫৫৭ জন, আর গ্রিসে পৌছাঁয় ৫ হাজার ৭০ জন; যা গত বছরের তুলনায় ১৫৩ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ২০২২ সালে ইতালিতে মোট ২৮ হাজার ৫০৪ জন বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসী নিবন্ধন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিসরীয়রা।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর-৩ আসনের সাংসদ নাহিম রাজ্জাক, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
সভায় বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বিদেশ নেয়ার কথা বলে কোনো দালাল যেন কোনো সহজ-সরল, নিরীহ মানুষকে প্রলুব্ধ করে মৃত্যুর ফাঁদে নিক্ষেপ না করতে পারে সে জন্য সবার সহযোগিতা চাই। যারা প্রতারিত হচ্ছে তারা আপনার আমার ভাই, বন্ধু ও পরিবারের লোক। তারা আপনার সন্তানও হতে পারে। সবাই এগিয়ে আসুন আমরা হাতে হাত মিলিয়ে এই অঞ্চল থেকে এই অনিরাপদ অভিবাসন চিরতরে নির্মূল করি।’
মতবিনিয়ম সভায় শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকার দালালের মাধ্যমে প্রতারিতরা ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এএ