শ্রীলঙ্কাকে দেখে আমাদের চিন্তা করা উচিৎ বলে মনে করেন ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আমাদের দেশ শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যাচ্ছে, মানুষের মধ্যে এমন আতঙ্ক কাজ করছে। এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি অর্থনীতিবিদ না, যদিও আমি ইকোনমিক্সের ছাত্র। আমাদের দেশে ওই পরিস্থিতিতে না হলেও অবশ্যই শ্রীলঙ্কাকে দেখে আমাদের চিন্তা করা উচিৎ। আমাদের প্ল্যান করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে তেমনটি না। আমাদের জন্য বড় ভালো জিনিস হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে এটা কিন্তু ভালো।’
ডলারের বাজারের অস্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে আস্থার অভাব, অকার্যকারিতা একই সাথে বাজার অস্থির করে সেখান থেকে কিছু গোষ্ঠীর মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার কারণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে ডলারের বাজার।
তিনি বলেন, আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজার বর্তমানে অচল। এটাকে সচল করতে হবে। চলমান ডলার বাজারের অস্থিরতায় হয়তো কোনো ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে আস্থা বাড়াতে হবে।
তার মতে, আন্তঃব্যাংক লেনদেন ব্যবস্থা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ক্ষেত্রে চালু করতে পারলে সংকট উত্তরণ সম্ভব।
পুনঃতফসিলকৃত ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা নতুন সার্কুলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সুশাসনের গতি ত্বরান্বিত করবে। আগে যেখানে ঋণ রি-শিডিউলের তিনমাস চার মাস লাগতো এখন সাত দিনের মধ্যে আমরা এটা করে ফেলতে পারবো।’
এবিবি’র চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যাংকে ঋণের রি-শিডিউলের অনুমোদন কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিবে এটা আমাদের মতো বিশ্বের কোথাও নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি অ্যাপ্লিকেশন মঞ্জুর করবেন। এটা আশ্চার্যজনক বিষয়। এটা তাদের দায়িত্ব নয়, এটা ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব। এটা সার্কুলার অত্যন্ত কার্যকর হবে যদি আমরা এটা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারি। এতে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) ম্যানেজম্যান্ট অনেক মজবুত হবে।’
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে এত দক্ষ মানুষ আছেন যারা সব বিষয়ে জ্ঞান রাখেন! অথচ আমি ৩৬ বছর ব্যাংকে চাকরি করেও আমার বিষয়টি বুঝতে তিনদিন সময় লেগেছে। যে কারণে আমাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে এত দেরি হয়েছে। হয়তো এই সার্কুলার নিয়ে আমাদের আরও দুইদিন আগে কথা বলা দরকার ছিল। কিন্তু আমরা করতে পারিনি। এ জন্য আমরা দুঃখিত।’
এএ