স্পেনের বার্সেলোনায় মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন (৩১) নামে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মুত্যু হয়েছে বলে পাকিস্তানি এক যুবকের মাধ্যমে জানতে পারে তার পরিবার।
গিয়াস উদ্দিনের লাশ বর্তমানে বার্সেলোনার Tanatori-Crematori Àltima Figueres, Girona-তে রয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত গিয়াস উদ্দিন পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নের নলান্ধা গ্রামের মোহাম্মদ নবীর বড় ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই আশরাফ উদ্দিন আরমান জানান, গত বুধবার সকালে আম্মুর সঙ্গে বড় ভাইয়ের সর্বশেষ কথা হলেও সারাদিন তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। বুধবার ১২টার সময় তার বন্ধু পাকিস্তানি নাগরিক বিকিকে (ডাক নাম কাউছার) আম্মু ফোন দেন। প্রথমে তিনি সঠিক তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। পরে একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় ভাইয়া নিহত হয়েছেন বলে রাত ১২টার দিকে জানান। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ওই পাকিস্তানি যুবকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি গিয়াসের পরিবারের।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, গিয়াসউদ্দিন সপরিবারে ওমানে বসবাস করতেন। সেখান থেকে ২০০৭ সালে স্পেনে পাড়ি দেন স্টুডেন্ট ভিসায়। এরপর ২০০৮ সালে তাদের পরিবারের অন্য সবাই দেশে ফিরে আসেন। গিয়াসউদ্দিন ওমানে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
স্পেনের বার্সেলোনায় যাওয়ার পর পড়াশোনার পাশাপাশি গিয়াস একটি রেস্টুরেন্টে চাকরি করতেন। চাকরিরত অবস্থায় পাকিস্তানি নাগরিক কাউছারের (বিকি) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। তার সঙ্গে যৌথভাবে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার জন্য দেশে থাকা পরিবার জুলাই মাসে দুই দফায় পাঁচ লাখ করে মোট দশ লাখ টাকা পাঠায়। চলতি বছর ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে তার দেশে ফিরে আসার কথা ছিল।
নিহতের পরিবারের ধারণা, ব্যবসার নাম করে পাকিস্তানি নাগরিক বিকি গিয়াস উদ্দিনকে প্রলোভন দেখিয়ে দশ লাখ টাকা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায়। এরপর বিকি পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তারা। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন সবার বড়।
সন্তানের মৃত্যুর খবরে তাদের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে লাশটা যেন দেশে আসে, সেজন্য আকুতি জানিয়েছে তার পরিবার। এজন্য তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে স্পেনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধান এ টি এম আবদুর রউফ মন্ডল বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তার ভাইকে আমরা বলেছি লাশ ফেরতের ব্যাপারে দূতাবাসে একটি লিখিত আবেদন করতে। আবেদন পেলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো।
এনজে