সারের কৃত্রিম সংকট বা কেউ যাতে দাম বেশি নিতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। রোববার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে ভার্চুয়ালি ‘সার্বিক সার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ সভায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।
সায়েদুল ইসলাম বলেন, দেশে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে। কোথাও সারের সংকট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই নিয়মিত তদারকির অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা দেয়া।
তিনি বলেন, কেউ গুজব ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংকট তৈরি করছে কিনা, এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তাদের বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে রশিদ ছাড়া যেন সার বিক্রি না হয়। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার দোকানে লালসালুতে বা ডিজিটালি সারের মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে হবে।
ডিলাররা যেন বরাদ্দকৃত সার যথাসময়ে উত্তোলন করে তা নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তদারকি জোরদার করার কথা বলেন কৃষি সচিব।
তিনি বলেন, কোনো ডিলার বরাদ্দকৃত সার যথাসময়ে উত্তোলন না করার কারণে বিক্রির সময় রেশনিং করে থাকেন, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। এতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের মাঝে এক ধরনের কৃত্রিম আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। ডিলারের গুদাম ভিজিট করে সারের অ্যারাইভাল নিশ্চিত করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কৃষি বিভাগ নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।
সায়েদুল ইসলাম বলেন, অধিক মূল্যে সার বিক্রির কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক রিপোর্ট করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে কৃষি অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ডিলারদের নিয়ে সভা করে কৃষক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সবাইকে সারের পর্যাপ্ততা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, চাহিদার বিপরীতে দেশে সবরকম সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে (২১ আগস্ট) ইউরিয়া সারের মজুত ৬ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডিএপি ৭ লাখ ৩৬ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন।
এতে বলা হয়, সারের বর্তমান মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন এবং এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন।
সভায় জানানো হয়, বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও সারের বর্তমান মজুত বেশি। বিগত বছরে এসময়ে ইউরিয়া সারের মজুত ছিল ৬ লাখ ০৬ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ২ লাখ ২৭ হাজার টন, ডিএপি ৫ লাখ ৫৬ হাজার টন এবং এমওপি ১ লাখ ৯৬ হাজার টন।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বিএডিসির চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দেশের জেলা-উপজেলাসহ মাঠ পর্যায়ের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন। এতে প্রতিটি জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকরা সারের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
এএ