মোবাইল-ফোন বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাসা-অফিস, অবকাশ যাপন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা- কিছুই যেন জমে উঠে না এখন মোবাইলের সঙ্গ ছাড়া। মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে অসতর্কতাবশত সাইলেন্ট না করলে অনেক সময় নামাজের মাঝেই বেজে উঠে ফোন। এতে বিব্রত হতে হয়। আবার নামাজেরও ব্যাঘাত ঘটে।
কখনও নামাজ পড়া অবস্থায় রিংটোন বেজে ওঠে কর্তব্য হলো, মোবাইলের দিকে না তাকিয়ে নামাজের মধ্যেই এক হাতের সাহায্যে মোবাইল পকেটে রেখেই পাওয়ার বাটন চেপে রিংটোন বন্ধ করে দেওয়া।
তবে কারও কল এলে ইচ্ছাকৃত দেখার কারণে নামাজ মাকরুহ হবে। কেননা নামাজ অবস্থায় কোনো লেখা দেখা এবং বোঝার চেষ্টা করা মাকরুহ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নামাজে মোবাইলের রিংটন বন্ধ করার জন্য দুই হাত ব্যবহার করা যাবে না। পকেট থেকে মোবাইল বের করতে হলে সেক্ষেত্রেও এক হাতে বন্ধ করতে হবে। কারণ একসঙ্গে দুই হাত ব্যবহার করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
কল আসামাত্রই মোবাইলটি এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে দেবে। বন্ধ করার জন্য বাটন দেখার প্রয়োজন হলে দেখতে পারবে।
-(আলমুহিতুল বুরহানি : ২/১৫৯; শরহুল মুনইয়াহ, পৃষ্ঠা : ৪৪৭; আদ্দুররুল মুখতার : ১/৬৩৪, ৬২৪)
ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এতে মনোযোগ ধরে রাখা আবশ্যকীয়। তাই মোবাইল ব্যবহারকারীদের কর্তব্য হলো, মসজিদে প্রবেশের আগেই অথবা অন্ততপক্ষে নামাজে দাঁড়ানোর আগে মোবাইল ফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট করে রাখা। কেননা নামাজের মধ্যে মোবাইল বেজে উঠলে অন্য নামাজিদেরও ব্যাঘাত ঘটে। তাই যথাসময়ে ফোন বন্ধ-সাইলেন্টের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,‘যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে, এরাই আল্লাহর জান্নাতে মর্যাদাসহকারে প্রবেশ করবে।’ -(সুরা মাআরিজ, আয়াত, ৩৪ ও ৩৫)
কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই সফল হয়েছে মুমিনরা, যারা নিজের নামাজ আদায় করে বিনীতভাবে।’- (সুরা মুমিন, আয়াত, ১-২)
আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে, তিনি তাদের ধোঁকায় ফেলে শাস্তি দেন এবং তারা যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, লোক দেখানোর জন্য, তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ -(সুরা নিসা, আয়াত, ১৪২)
অন্যত্র বলা হয়েছে, `এরূপ নামাজিদের জন্য বড় সর্বনাশ যারা স্বীয় নামাজ হইতে গাফেল। (সূরা মাউন : আয়াত ৪,৫)
সানবিডি/এমআর