নতুন এক অভিবাসন আইনের আওতায় জার্মান সরকার দেশটিতে অভিবাসন সহজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। শ্রমিক-কর্মীর অভাব মেটাতে প্রস্তাবিত সেই আইনের রূপরেখা তুলে ধরলেন জার্মান শ্রমমন্ত্রী।
বিমানবন্দরে মালপত্র ব্যবস্থাপনার লোক নেই, হোটেল-রেস্তোরাঁয় পরিচারকের অভাব, কারখানায় প্রয়োজনমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি উচ্চশিক্ষিত কর্মীর অভাব তো রয়েছেই। ফলে বেড়ে চলা চাহিদা সত্ত্বেও শ্রমিক-কর্মীর অভাবের কারণে জার্মানির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অতএব পড়ন্ত জন্মহারের সেই দেশে বিদেশ থেকে অভিবাসী আনা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই বাস্তব নিয়ে শিল্পবাণিজ্য জগতে কোনো সংশয় না থাকলেও এখানকার রাজনীতি জগত অভিবাসন ত্বরান্বিত করতে তেমন কোনো ‘সাহসী’ পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমান সরকার দ্রুত অতীতের সেই ‘ভুল’ সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
রোববার জার্মানির মন্ত্রী হুব্যার্টুস হাইল প্রস্তাবিত অভিবাসন আইনের রূপরেখা তুলে ধরেন। আধুনিক যুগের উপযুক্ত এক আইনের মাধ্যমে তিনি শ্রমিক-কর্মীর অভাব মেটানোর লক্ষ্য স্থির করেন। তিনি বলেন, কানাডার মতো পয়েন্ট সিস্টেম চালু করে আবেদনকারীদের বৈধভাবে জার্মানিতে এসে কাজের সুযোগ দিতে চায় সরকার।
চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং জার্মানিতে বসবাসরত মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে সরকার প্রস্তাবিত অভিবাসন আইনে ‘অপরচুনিটি কার্ড’ নামের এক ব্যবস্থাও রাখতে চায়। এর আওতায় প্রতি বছর প্রতিটি ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী অভিবাসীদের সংখ্যা স্থির করা হবে৷ অর্থাৎ একটা ঊর্ধ্বসীমার পর আর লোক আনা যাবে না।
যারা আসবেন, তাদের চাকরি বা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপার্জন করতে হবে, সরকারের ওপর আর্থিক নির্ভরতা চলবে না।অভিবাসীদের ওয়ার্ক ভিসার মেয়াদও আপাতত সীমিত থাকবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা জার্মানিতে স্বীকৃত হলে কোনো ব্যক্তির আবেদন দ্রুত মঞ্জুর হবে। না থাকলেও ক্ষতি নেই। জার্মানির কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গুণ থাকলেও সহজে সে দেশে কাজের অধিকার দেবে নতুন আইন, বলেন জার্মান শ্রমমন্ত্রী।
জার্মানিতে কাজ করতে আগ্রহী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নতুন অভিবাসন আইনের পয়েন্ট সিস্টেমের আওতায় মূলত চারটি প্রধান শর্ত রাখা হচ্ছে। বিদেশে শিক্ষাগত যোগ্যতা, কমপক্ষে তিন বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা, জার্মান ভাষার ওপর দখল অথবা অতীতে জার্মানিতে বসবাসের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আবেদনকারীর বয়স ৩৫-এর বেশি হলে চলবে না। চারটির মধ্যে তিনটি শর্ত পূরণ করলে ‘অপরচুনিটি কার্ড’ পাওয়া যাবে। তবে খুঁটিনাটি বিষয়ে সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বর্তমানে বিদেশে বসে জার্মানিতে কাজের সুযোগ খোঁজা ও অভিসানের আবেদন করা বেশ কঠিন। প্রস্তাবিত অভিবাসন আইন কার্যকর হলে সেই প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে বলে মনে করছে সরকার।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
সানবিডি/এমআর