ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাৎকার
আমরা গণতন্ত্র সুরক্ষায় কঠোর আইন করেছি: প্রধানমন্ত্রী
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২২-০৯-২৮ ১৮:৫৩:৩৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েকবছর পর স্বৈরশাসকরা এসে ক্ষমতা দখল করে নেয়। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডে যে গোষ্ঠী জড়িত ছিল তারা জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান বানিয়েছে। সেনাপ্রধানের পদে থেকে জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধানও ঘোষণা করেছে। এরপর এরশাদও সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় এসেছে। এখন আর সেই সুযোগ নেই। আমরা গণতন্ত্র সুরক্ষায় কঠোর আইন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালে যখন তত্বাবধায়ক সরকারের সময় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন একটি বাড়িতে বন্দি অবস্থায় ছিলাম, তখনও আমি সময় নষ্ট করিনি। ভেবেছি পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে অর্থাৎ ক্ষমতায় গেলে আমরা কী করবো। এজন্য ভেবেচিন্তে নোট করা শুরু করলাম কোন কোন কাজ গুলো কীভাবে করবো। শেষ পর্যন্ত সত্যিই ২০০৮ সালে তারা বাধ্য হল ইলেকশন দিতে এবং আমরা আমাদের পরিকল্পনা তৈরি করলাম ২০২১ সালকে লক্ষ্য করে। এরপর ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের উন্নয়ন কজেও ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। কাজের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ।
ভয়েস অব আমেরিকাকে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালে এই একান্ত সাক্ষাৎকার দেন প্রধানমন্ত্রী। ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠন করার পরে আবার ২০১৪ সালে নির্বাচন হলো। জনগণ আমাদের কাজে খুশি হয়ে আমাদের আবার ভোট দিল। আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসলাম। আবার একটা সুবিধা হলো ধারাবাহিকতা থাকলে কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া যায়। এরপর তৃতীয়বারও যখন নির্বাচন হলো তখন আমাদের ব্যাপকভাবে তারা ভোট দিলো এবং আমাদের কাজগুলি আমরা করতে পারলাম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যা লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্য বিমোচন করা প্রায় ৪১ শতাংশ থেকে আমরা ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামালাম। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য আরও বেশি ছিল। আমি তো বলেছিলাম আমরা আরও কমিয়ে অন্তত ১৬-১৭ শতাংশ নামিয়ে নিয়ে আসবো দারিদ্র্যের হার। এর মাঝে যেটা হলো করোনাভাইরাস এসে অগ্রযাত্রাটা একটু ব্যাহত করে দিলো। সেখান থেকে আমরা যখন আবার একটু উত্তরণ ঘটাতে শুরু করলাম ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ সেটাও আজকে একটা বাধা সৃষ্টি করল।’
তিনি জানান, তার সরকারের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা ২০২০ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন আর ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ঘিরে তৈরি ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই উন্নয়ন পরিকল্পনায় আমরা যেটা সবচেয়ে বেশি করেছি সেটা হলো যত বেশি অর্থ সরবরাহ গ্রামে করা যায় অর্থাৎ গ্রামের মানুষকে তুলে নিয়ে আসা। যেমন যারা গৃহহীন মানুষ, এটা স্বাধীনতার পর আমার বাবা শুরু করেছিলেন যে ভূমিহীন মানুষকে তিনি জমি দেবেন ঘর করে দেবেন। আমরা সেই কাজটা আবার শুরু করলাম।’
সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়, একটা অভিযোগ করা হয়ে থাকে যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অপপ্রয়োগের ফলে বাংলাদেশে একধরনের ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে যার ফলে মিডিয়াগুলো ব্যাপক সেলফ সেন্সরশিপ চর্চা করছে?
মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, মানবাধিকার সুরক্ষায় বর্তমান সরকার কাজ করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এম জি