আবারো দাম কমলো ওয়ালটন এলইডি টিভির। এবার দাম কমেছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। কারখানায় উচ্চমানের মেশিনারিজ সংযোজন এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় কমে গেছে পণ্য উৎপাদনের খরচ।
এজন্য কর্তৃপক্ষ দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, সর্বাধূনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ওয়ালটন টিভির গুনগত মান আরো বেড়েছে। এর আগে গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে টিভির দাম কমিয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে সাশ্রয়ী দামে উচ্চ গুণগত মান সম্পন্ন এলইডি টিভি দেয়ার উদ্দেশ্যে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন শুরু করেছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন শুরুর পর সেই লক্ষ্য পূরণে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে তারা।
গত ১৪ মার্চ থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ওয়ালটন টিভি। মডেল ভেদে এলইডি টিভির দাম কমেছে ২’শ ৫০ টাকা থেকে ৩’ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে এলইডি টিভির দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে ওয়ালটন।
১৯ ইঞ্চি এলইডি টিভি এখন আগের চেয়ে আরো কমে মাত্র ১১,৯০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ২৪ ইঞ্চি এলইডি টিভি মিলছে ১৪,৯০০ টাকায়, দাম কমেছে ১,০০০ টাকা। ২৮ ইঞ্চি এলইডি টিভির দাম আগের চেয়ে কমিয়ে এখন নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১৯,৯০০ টাকা। ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভির দুটি মডেলের দাম আগের চেয়ে ১,০০০ টাকা কমেছে, এখন ক্রেতারা পাচ্ছেন যথাক্রমে ২৩,৯০০ ও ২৬,৭০০ টাকায়। ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভিতে দাম কমানো হয়েছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৪৩ ও ৪৯ ইঞ্চির এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভির দাম এখন যথাক্রমে ৫২,৯০০ ও ৬৬,৯০০ টাকা। এছাড়াও ৩ হাজার টাকা কমে ৫৫ ইঞ্চির এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি এখন পাওয়া যাচ্ছে ৮১,৯০০ টাকায়।
জানা গেছে, গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনে এলইডি টিভির প্লাস্টিক কেবিনেট, স্পীকার, রিমোট কন্ট্রোল ইউনিট, মাদার বোর্ড, ইলেকট্রিক পাওয়ার ক্যাবল এবং প্যানেল প্রডাকশনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে পৃথক ম্যানুফাকচারিং লাইন। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন শুরু পর থেকেই ওয়ালটন এলইডি টিভির প্রতি গ্রাহকদের চাহিদা ও আস্থা ব্যাপক বেড়েছে। আর চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় কমছে টেলিভিশন প্রতি উৎপাদন খরচ। এরই সুফল গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে ওয়ালটনের দাম কমানোর এই উদ্যোগ।
ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা জানান, নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ইউএসবি পোর্ট, ভিজিএ পোর্ট, এইচডিএমআই, ওয়াইপিবিআর, এভি, ইন্টারনেট ব্রাউজিং ও ডাউনলোড, ওয়াইফাই, ব্রডব্যান্ড কানেকশন, ইন্টারনেটে গেমস এবং ভিডিও ও ছবি দেখাসহ আরো অনেক সুবিধা। যার ফলে ওয়ালটন টিভি অন্য ব্র্যান্ডগুলোর চেয়ে এগিয়ে।
ওয়ালটনের মার্কেটিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাজারের সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চ প্রযুক্তির এলইডি টিভি সরবরাহ করা। আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। চেষ্টা করছি আরো সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ইলেকট্রনিক্স পণ্য সরবরাহের। আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন বাংলাদেশের বাজার থেকে বিদেশী পণ্যের আধিপত্য দূর করা। এখন চেষ্টা করছি বাংলাদেশী এই ব্র্যান্ডটিকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার। তিনি বলেন, ওয়ালটন সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে উৎপাদন পর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণে অনুসরণ করছে ’জিরো টলারেন্স’ নীতি।
ওয়ালটনের সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফার্স্ট সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নিজস্ব মান নিয়ন্ত্রণে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এলইডি টিভি। পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত ও গ্রাহকদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রেখে ওয়ালটন বাজারে এনেছে এইচডি, এইচডি রেডি ও এফএইচডি রেজ্যুলেশনের বিভিন্ন সাইজের এলইডি টিভি।
ওয়ালটন এখন তৈরী করছে ১৯ ও ২৪ ইঞ্চির বিভিন্ন মডেলের কালার লাইন টিভি। ওয়ালটন এলইডি টিভিতে ব্যবহার করা হচ্ছে আইপিএস (ইন প্ল্যান সুইচিং), এডিএস (এ্যাডভান্স সুপার ডাইমেনশন সুইচ) এবং এইচএডিএস (হাই এ্যাডভান্স সুপার ডাইমেনশন সুইচ)) প্রযুক্তির প্যানেল। এর ফলে দর্শকরা ওয়াইড ভিউয়িং এ্যাঙ্গেল এবং হাই কন্ট্রাস্ট এর পিকচার দেখতে পাচ্ছেন।
এছাড়াও, আইএসও ক্লাস সেভেন ডাস্ট ফ্রি ক্লিন রুম এর সর্বোচ্চ সতর্কতা ও গুণগতমান রক্ষা করে তৈরী করা হচ্ছে এলইডি টিভি প্যানেল। ছবি ও শব্দের উচ্চমান নিশ্চিতকরনে ডাইনামিক নয়েজ রিডাকশন, সর্বোচ্চ ফ্রেম রেট, ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সমৃদ্ধ নিজস্ব ডিজাইনের উন্নত প্রযুক্তির মাদারবোর্ড ব্যবহার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গুণগত উচ্চমানের পাশাপাশি দেশব্যাপী বিস্তৃত সার্ভিসিং নেটওয়ার্ক থাকায় ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে এখন ওয়ালটন। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনেরই রয়েছে আইএসও সনদ প্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। গ্রাহক সেবা দিতে সারা দেশে কাজ করছেন প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানসহ ১৫শ’রও বেশি দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী।
এছাড়াও ওয়াটনের রয়েছে শক্তিশালী গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। যেখানে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে থিম ডেভলপমেন্ট, প্রোডাক্ট ডিজাইন, মোল্ড ডিজাইন এবং মোল্ড তৈরির কাজ করা হচ্ছে। যার ফলে ক্রেতাদের চাহিদা ও আগ্রহ অনুযায়ী নিত্য নতুন প্রযুক্তি, বিভিন্ন কালার ও ডিজাইনের ওয়ালটন এলইডি টিভি বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।
সানবিডি/ঢাকা/আহো