‘খালেদা বিদেশিদের হত্যা করাচ্ছেন’

প্রকাশ: ২০১৫-১০-১৫ ১৮:৪৪:২৭


Hasina 2প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে আড়াই হাজার বাস পুড়িয়েছেন। দেড়শো মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন। এখন তিনি বিদেশে বসে এ দেশে বসবাসরত বিদেশিদের হত্যা করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজমাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রাম বীজ হিমাগার, চিফ জুডিশিয়াল ভবন, টেকনিকেল ট্রেনিং সেন্টারসহ ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুড়িগ্রাম এক সময় মঙ্গা এলাকা বলে চিহ্নিত ছিল। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মঙ্গা শব্দটি মুছে দিয়েছে।

তিনি বলেন, কুড়িগ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে। প্রত্যেক উপজেলায় একটি কলেজ ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম গড়ে তোলারও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মণ্ডলের সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আলী প্রমুখ।

এর আগে কুড়িগ্রামের দাসিয়ার ছড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছিটমহলবাসীরা আর পরবাসী নয়। অধুনা বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সব ধরনের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তারা বাংলাদেশের অন্য নাগরিকের মতো সমান অধিকার পাবে।

তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিটবাসীর মুক্তির জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে ছিটমহল বিনিময় অনেক আগেই হত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নে অন্য সরকারগুলো কোনো কাজ করেনি। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষতায় এসে প্রটোকল চুক্তি, স্থলসীমানা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর সীমানা নির্ধারণ, লোক গণনাসহ নানা পর্যায় অতিক্রম করে মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতের রাজ্য সভায় উথত্থাপন করেন। ভারতের সব রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় ছিটমহলবাসীদের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।

তিনি অধুনালুপ্ত ছিটবাসীদের একগুচ্ছ প্রস্ফূটিত ফুল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিনি ছিটমহল বিনিময়ের সফলতায় ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারসহ মোদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ১১টায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়ায় পৌঁছে ৬৩ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইনের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট-নীলফারী ও ঠাকুরগাও জেলার ১০টি ছিটমহলের দুই হাজার ৫৬১ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন করেন। পরে তিনি সাবেক ছিটবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, ছিটবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের সব বিভাগকে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, ছিটবাসীর পক্ষে হৈমন্তী শুক্লা প্রমুখ।