প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বমানের আধুনিক একটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রোববার (৬ নভেম্বর) ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২’ উপলক্ষে শনিবার (৫ নভেম্বর) দেয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
‘অগ্নি দুর্ঘটনাসহ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগ-দুর্ঘটনার বিষয়ে জনসাধারণকে আরও সচেতন করার লক্ষ্যে রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২’ উদযাপিত হবে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের জরুরি সেবাধর্মী একটি প্রতিষ্ঠান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব দুর্যোগে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা। সবার আগে তারা বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এ প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাদের আত্মবিসর্জনের এ ঘটনাই প্রমাণ করে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা কতটা নিবেদিত। ‘আমি এ ১৩ জন বীর অগ্নি সেনাসহ বিভিন্ন সময় দেশের জান-মাল রক্ষা করতে গিয়ে আত্মাহুতি দেয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সব সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বর্তমান সরকার এ ১৩ বীর অগ্নিযোদ্ধাকে ‘অগ্নিবীর’ খেতাবে ভূষিত করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাস্তবমুখী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, দেশের প্রতিটি উপজেলায় নূন্যতম একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করবো। ফলশ্রুতিতে ২০০৯ সালের পর থেকে আমরা ২৮৬টি নতুন ফায়ার স্টেশন চালু করেছি। ২০০৯ সালের আগে দেশে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ছিল ২০৪টি। এ সংখ্যাকে আমরা এরইমধ্যে ৪৯০টিতে উন্নীত করেছি।
আরও বেশ কিছু ফায়ার স্টেশন খুব শিগগিরই চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা এই বাহিনীর সদস্যদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিত করতে ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ‘বঙ্গন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছি বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কর্মদক্ষতা বিশ্বমানে উন্নীত হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা করেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র কর্মীরা সাহস, সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবেন।
তিনি ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২’র সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র: বাসস
এএ