হাইকোর্ট সারাদেশের কারাগারে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ৮৮ জনের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আইজি প্রিজন্সকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এই আদেশ দেন। রুলে সিলেট কারাগারে আরেকজনের পরিচয়ে ১৮ বছর ধরে কারারক্ষীর চাকরি করা জহিরুল সরিয়ে প্রকৃত জহিরুল ইসলাম এশুকে কেন নিয়োগ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এই মামলার বিবরণে জানা যায়, কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য ২০০৩ সালে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এশু। উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর যোগদানপত্র পাননি তিনি। চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে কাপড় ব্যবসা শুরু করেন। ১৮ বছর পর জানতে পারেন প্রতারণার মাধ্যমে তার নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ওই পদে চাকরি করছেন আরেকজন। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিও ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তবে এরপরও প্রতারণা করে চাকরি নেওয়া ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুত না করায় কারা অধিদফতরে আবেদন করেন প্রকৃত জহিরুল ইসলাম এশু। তার সেই আবেদন নিষ্পত্তি না করায় হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। শুনানি শেষে বুধবার এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। এর আগে মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, 'এখন আর বস্তায় নয়, ঘুষ নিচ্ছে ডলারে।' এ সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক কী করে- এমন প্রশ্নও তোলেন হাইকোর্ট।
মামলা সূত্রে আরও জানা গেছে, ছদ্মবেশ ধারণ এবং বিভিন্ন জাল-জালিয়াতি করে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ২০০ কারারক্ষী চাকরি করছে- গণমাধ্যমে এমন খবর প্রচারিত হয়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে ৮৮ জনের জালিয়াতি প্রমাণ মেলে। এর মধ্যে এমন তিনজন পাওয়া যায় যারা অন্য আরেকজনের পরিবর্তে চাকরি করছেন। জহুরুল ইসলামের নামে একজনের পরিবর্তে কারাগারে চাকরি করছেন একই নামের আরেকজন। পরে এ ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত হাইকোর্টে আবেদন করেন।
এনজে