শিশু সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সোমবার (২১ নভেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
জানা যায়, শ্বাসযন্ত্রে, নিউমোনিয়াসহ নানা জটিল রোগ নিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী ইমাম শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বরেণ্য শিশুসাহিত্যিক, শিশু সংগঠক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ছয়শোরও বেশি বইয়ের লেখক তিনি। কর্মজীবনের শেষ প্রান্তে একাধিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের আগে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন (২০০৪-২০০৬) ও অধুনালুপ্ত চ্যাানেল ওয়ান (২০০৭-২০০৮)-এর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ বছর তিনি ইউনিসেফের ‘মা ও শিশুর উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম প্রকল্প’ পরিচালক ছিলেন। ওই দায়িত্ব পালনকালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে, জার্মানির মিউনিখে, ব্রাজিলের রিওতে অনুষ্ঠিত ‘চিলড্রেন মিডিয়া সামিটে’ যোগদান করেন। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত ‘প্রি জুঁনেসি চিলড্রেনস টিভি প্রোডাকশন প্রতিযোগিতা’র (২০০০) জুরির দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়াও তিনি ছিলেন ‘সার্ক অডিও ভিজুয়াল বিনিময় অনুষ্ঠানে’র প্রধান সমন্বয়কারী (২০০০-২০০১)। টেলিভিশন ও বেতারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের নির্মাতা ও উপস্থাপক হিসেবে তার বিশিষ্টতা বিশেষ প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হ্যালো, আপনাকে বলছি’ (১৯৯৯-২০০৪) নামে তার উপস্থাপিত সরাসরি অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। এ-ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিখ্যাত প্রামাণ্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’র (১৯৮০-১৯৮৭) আলোচিত প্রযোজক ছিলেন আলী ইমাম।
শিশু সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য আলী ইমাম বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (২০০১) এবং শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১২) ছাড়াও অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে জাপান ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ২০০৪ সালে তিনি সমগ্র জাপান পরিভ্রমণ করেন ।
এএ