আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আবাসন খাতে বিনা শর্তে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
দেশের নিম্ন, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প খাতের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় রিহ্যাবের নেতারা এ দাবি তোলেন। বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
এ সময় রিহ্যাবের সিনিয়র সহ সভাপতি রবিউল হক বলেন, কালোটাকা বিনিয়োগের সুবিধা ৫-১০ বছরের জন্য দিতে হবে।বর্তমানে শর্ত সাপেক্ষে আবাসন খাতে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ আছে বলেও তিনি জানান।
সভায় আগামী বাজেটে সেকেন্ডারি বাজার প্রচলন, কর অবকাশ, নিবন্ধন কর কমানোসহ ১৮টি দাবি জানিয়েছে রিহ্যাব।কালোটাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ দিয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজেটে অর্থ আইন, ২০১৩-এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এ ১৯ বিবিবিবিবি নামের একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়। এতে বলা হয়, নির্ধারিত কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। অবৈধ ও অপরাধ সংঘটন করে অর্জিত কোনো অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীকে অর্থের উৎস উল্লেখ করতে হবে। মূলত এখানেই আপত্তি রিহ্যাবের।
সংগঠনটি বলছে, যারা ফ্ল্যাট কিনবেন, তাদের আয়ের উৎস না খোঁজার বিষয়টি উল্লেখ করে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (বিবিবিবিবি) ধারা পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। ২০১১ সালে এটি রহিত করা হয়।
এসময় বিনা শর্তে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগের পক্ষে রিহ্যাব যুক্তি দেখিয়েছে, আইনটি পুনঃপ্রবর্তন করা না হলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। এ ছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলে ভবিষ্যতে ওই বিনিয়োগকারীরা করজালের মধ্যে আসবে। তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
সভায় সংগঠনটির সহ সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়াঁ বলেন, বর্তমানে ফ্ল্যাট ও প্লট নিবন্ধনের সময় ১৪ শতাংশ কর ও ফি দিতে হয়। এর মধ্যে ৪ শতাংশ করে গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ফি ৩ শতাংশ, নিবন্ধন ফি ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ ও ৩ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দিতে হয়। এই অত্যাধিক ব্যয়ে ক্রেতারা নিবন্ধনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
এমন বিবেচনায় সংগঠনটির প্রস্তাব, সব মিলিয়ে নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট কর ও ফি ৭ শতাংশ করা হোক। এর মধ্যে ২ শতাংশ গেইন ট্যাক্স; স্ট্যাম্প ডিউটি ও মূসক দেড় শতাংশ, নিবন্ধন ফি ও স্থানীয় সরকার কর ১ শতাংশ।
আসছে বাজেটে পরিবেশবান্ধব আবাসন নির্মাণে কর রেয়াত সুবিধা চায় রিহ্যাব। এমন সুযোগ দিলে উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব প্রকল্প নিয়ে আগ্রহী হবেন বলে মনে করে সংগঠনটির নেতারা।