প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে গণমাধ্যমের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে ভূমিকা রাখায় তথ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। এ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালীকরণের প্রক্রিয়ায় তিনি সব রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ই-সিগারেট নিষিদ্ধের বিধান রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী দ্রুততম সময়ের মধ্যে ই-সিগারেট আমদানি বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
সঠিক তথ্য তুলে ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের পক্ষে জনমত গঠনে গণমাধ্যম কর্মীদের বিশেষ সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে আইনটি যেন দ্রুত সংশোধন করা যায় সে জন্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নাগরিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের মতবিনিময় করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
উন্নয়ন সমন্বয়ের পক্ষ থেকে উপস্থাপনায় জানানো হয়, সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন শক্তিশালীকরণের যে খসড়া প্রস্তাবটি প্রস্তুত করেছে তা খুবই যুগোপযোগী ও এর ফলে বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বৈশ্বিক মানে উন্নীত হবে। ফলে তামাক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্যগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই প্রস্তাবিত সংশোধনীটি বিশেষ সহায়ক হবে।
বক্তারা জানান, প্রস্তাবনা অনুসারে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা ডিএসএ বাতিল করা গেলে পাবলিক প্লেস ও ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারকারীদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ কমতে পারে। এ কারণে নেপাল, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের ৬৯টি দেশে পাবলিক প্লেসে ধূমপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ জন মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করছে, তাই অবিলম্বে খসড়া আইনটি পাস করার দাবি জানান তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সভাপতির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের মূল লক্ষ্য হলো কম বয়সী নাগরিকরা যেন নতুন করে তামাক ব্যবহার শুরু না করেন ও যারা তামাক ব্যবহার করেন না এমন নাগরিকদের তামাকের প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেওয়া। আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিংবা কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারেই অমূলক বলে তিনি মনে করেন।
এএ