বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার ১০ বছরে ৮৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। বিদ্যুতের জন্য ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। চালের দাম ১০ টাকা দেবে বলেছিল, এখন কত? পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, পেঁয়াজ-মরিচের দাম বাড়িয়েছে। ওদের আয় বাড়ে, ওরা ফুলে ফুলে এই মোটা হচ্ছে। দেশের শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের চুরির কথা বলতে গেলে দিনরাত পার হয়ে যাবে। ট্রেজারিতে কিচ্ছু নাই। আমাদের পায়রা বন্দরের টাকা দেওয়া হয়েছে নাকি রিজার্ভ থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- আগামী তিন মাস আমদানির টাকা নেই। সব গিলে ফেলেছে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, যারা তাকে বলে প্রধানমন্ত্রী। আমরা বলি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। জোর করে দুইবার নির্বাচন করেছে। ২০১৪ আর ২০১৮। ২০১৪ তে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেছে। আর ২০১৮ তে আগের রাতেই নাকি ভোট শেষ। উনি নাকি আবার নির্বাচন করবেন। গত পরশু যাশোরে সভা করেছেন। সভায় তিনি ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ আসলে নাকি জনগণ শান্তি পায়। আর বলেছেন- আবার নৌকায় ভোট দেন। আব্বাস উদ্দিনের একটা গান আছে- ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’ দেশের সব মানুষ এখন এই গান গাইতে শুরু করেছে। ভুলে যান, ওই নৌকার কথা ভুলে যান। এখন বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের বিদায় দেখতে চায়। সময় থাকতে মানে মানে কেটে পড়ুন। তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের বিদায় করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে বানচাল করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে ২০১৮ সালের মতো। এসব মামলা দ্রুত বিচার আইনে দিয়ে বিচার কাজ শুরু করে দিয়েছে। নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের কুমিল্লার লাকসামের এমপি হিরু গুম হয়েছে। গত ৯ বছর তার কোনো খবর নেই। তার ছোট্ট শিশু বাবার জন্য কাঁদে। সিলেটের ইলিয়াস আলীর মেয়েও বাবার পথ চেয়ে বসে থাকে। এই সরকার তাদের চোখের জলের ভাষা বুঝতে পারছে না, প্রতিটি মানুষের চোখে আগুন তারা দেখেও না দেখার ভান করে অবিরত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। বাঞ্ছারামপুরের নয়ন বিনা কারণে লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে গুলি খেয়েছে। নয়নের বাবা যে বক্তব্য দিয়েছিল, তার চোখে আগুন ছিল। এই আগুন দেশের প্রতিটি মানুষের। দেশের মানুষ এই সরকারকে প্রতিহত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিনের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন,নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা প্রমুখ।
এএ