রাজধানীর হাজারীবাগে আজ শুক্রবার থেকে কাঁচা চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গত ২০ মার্চ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদীর দূষণরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সংক্রান্ত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে হাজারীবাগ থেকে সব ট্যানারি কারখানা সাভারে নির্মিত চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের জন্য গত জানুয়ারি মাসে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এই সময়সীমা আরও দুই মেয়াদে বাড়ানো হয়। তবু হাজারীবাগ থেকে এখনও অনেক ট্যানারি কারখানা সাভারে স্থানান্তর করা হয়নি।
আজ শুক্রবার সকালেও হাজারীবাগ কাঁচা চামড়া ভর্তি গাড়ি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর থাকায় কোনো ট্যানারিতে এই চামড়া আনলোড করা সম্ভব হয়নি।
তবে কাঁচা চামড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্যানারি মালিকরা। এতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আজ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা থাকলেও গতকাল থেকেই ট্যানারিতে কাঁচা চামড়া ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার সকালেও ট্যানারিতে আসা কাঁচা চামড়া আনলোড করতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হতে পারে। এছাড়া ট্যানারিতে কর্মরত শ্রমিকরাও বেকার হয়ে যাবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা।
প্রসঙ্গত, সাভারের হেমায়েতপুরে ২০০ একর জায়গায় পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০০৩ সালের ১৬ আগস্ট একনেকে চামড়া শিল্পনগর প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এই শিল্পনগরে ২০৫টি প্লটে ১৫৫টি কারখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) মাধ্যমে সাভার চামড়া শিল্পনগরের নির্মাণ কাজ ২০০৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এই প্রকল্পের শুরু থেকেই কারখানা স্থানান্তরে মালিকদের অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। ইতোমধ্যে মাত্র কয়েকটি কারখানা সাভারের চামড়া শিল্পনগরে স্থানান্তর করা হলেও অধিকাংশ কারখানা হাজারীবাগে রয়ে গেছে।
কারখানা স্থানান্তরের জন্য সাভারে ভবন নির্মাণ করেনি অনেক ট্যানারি মালিক। অধিকাংশ প্লটে এখনও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারও (সিইটিপি) নির্মাণ করা হয়নি।