বাঙালির গৌরবের ইতিহাস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ডিসেম্বরের ১৬ তারিখেই বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় আসে। দেশ হয় হানাদারমুক্ত। আজ ১ ডিসেম্বর, ২০২২। শুরু হলো মহান বিজয়ের মাস।
পুরো এই মাস জুড়ে থাকবে নানা অনুষ্ঠান। বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কর্মসূচি। এরমধ্যে, আজ বেলা ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এই দিনে। মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতাকামী অদম্য বাঙালির কাছে। অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
১৯৭১ সালের এই মাসে সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় দামাল বাঙালি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শেষ করে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে তৎপর হয়। তালিকা করে একে একে হত্যা করা হয় দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের।
শেষ পর্যন্ত এ ডিসেম্বর মাসেই হানাদারবাহিনীকে পরাজিত করে বিজয়ের মাসে রচিত হয় নতুন ইতিহাস। বাংলার আকাশ হয় মুক্ত স্বাধীন।
এনজে