আজ তোমার লজ্জা ভেঙে দেবো: ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষক
আপডেট: ২০১৫-১০-১৬ ২০:৪৭:১৯
নোয়াখালীতে প্রধান শিক্ষকের হাতে ধর্ষণের অপচেষ্টার জবানবন্দি দিয়েছে নির্যাতিতা ছাত্রী। তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মুরাদ-এ-মাওলা সোহেল।
পঞ্চম শ্রেণীর ওই ছাত্রী মুখ্য বিচারিক হাকিমের খাস কামরায় আদালতকে জানায়, প্রধান শিক্ষক একজন নারীলোভী প্রকৃতির লোক। তিনি প্রায় সময়ই বিভিন্ন ধরনের খারাপ অঙ্গভঙ্গি করতেন। বলতেন খারাপ কথাবার্তা। ঘটনাটি পরিবারকে জানালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাকে সতর্ক করা হয়।
একদিন আমার মায়ের মোবাইলে ফোন করে প্রাইভেট পড়তে স্কুলে যাওয়ার জন্য বলে ওই শিক্ষক। মা আজকে বাড়িতে মেহমান এসেছে, এজন্য যেতে পারবে না জানালে তিনি বলেন, অন্য ছাত্রছাত্রীরা এসে বসে আছে। তখন মা আমাকে স্কুলে পাঠায়। মায়ের কথামতো আমি স্কুলে যাই। একপর্যায়ে দুপুর ২টার সময় প্রধান শিক্ষক সব ছাত্রছাত্রীকে ছুটি দিয়ে আমাকে লাইব্রেরিতে নিয়ে যায়। এ সময় অসৎ উদ্দেশ্যে খারাপ কথাবার্তা বলা শুরু করে। আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লে হেড স্যার বলেন, তোমাদের মেয়েদের একটাই সমস্যা। তোমরা লজ্জা পাও। আজ তোমার লজ্জা ভেঙে দেবো। একথা বলেই সে আমাকে ঝাপটে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ও চুম্বন শুরু করে। একপর্যায়ে দৌড়ে লাইব্রেরি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় তিনি আমার ওড়না ধরে টান দেয়। এতে আমার ওড়না ছিঁড়ে যায়। এরপরও আমি দৌড়ে পালিয়ে বাঁচি।
এদিকে পঞ্চম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে বুধবার সকালে মানববন্ধন করা হয়। এতে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দোয়ালিয়া স্কুল মাঠে এসে শেষ হয়। তারা অভিযুক্ত শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে। মানববন্ধন শেষে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভিকটিমের মা সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়েকে ওই শিক্ষক যৌন নিপীড়ন করেই ক্ষান্ত হয়নি। আমার ছেলেদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসীর ওপর চড়াও হয়। তার পক্ষ নিয়ে মনির হোসেন, হোমিও ডাক্তার আবু জাফর, বাহার, হোসেন, কামরুল হাসান, কামাল হোসেন, সোহেলসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন লাঠিসোটা, লোহার রড ও দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মারধর করে। এতে রাজু, আজিম, মো. সেলিম, এমাম হোসেন, আব্দুর রহিম আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।