সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় জঙ্গি গোষ্ঠী নুসরাত ফ্রন্টের একজন প্রভাবশালী নেতা নিহত হয়েছেন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে ওই হামলা চালানো হয়েছিল বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
পৃথক দুটি বিদ্রোহী সূত্র বলছে, রোববার মার্কিন ড্রোন বিমানের হামলায় নুসরাত ফ্রন্টের মুখপাত্র আবু ফিরাস ও তার ২০ জনের মত অনুসারী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তার এক ছেলেও রয়েছেন। তার মৃত্যুর খবর জানিয়ে স্থানীয় এক বিদ্রোহী সূত্র বলেছে, ‘আল্লাহ তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা। এই নেতাকে ক্রসেডাররা হত্যা করেছে।’
তবে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী ‘দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউমেন রাইটস’ বলছে, সিরিয়ার ইদলিব শহর সংলগ্ন উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এক গ্রামে ওই নেতা রুশ বা সিরীয় বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, আবু ফিরাসের নিহত হওয়ার খবরটি তাদের নজরে এসেছে। তবে রোববারের ওই হামলা সম্পর্কে তারা এখনো বিস্তারিত তথ্য পাননি। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নুসরাত ফ্রন্টের নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল।
একসময় আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে কাজ করেছেন নিহত ওই নুসরাত নেতা। কয়েক দশক আগে আফগানিস্তানে মৌলবাদী দল তালেবানদের উত্থান আন্দোলনেও তার ভূমিকা ছিল। প্রথম জীবনে সিরিয়ার সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছিলেন আবু ফিরাস। কিন্তু ইসলামি পন্থিদের সঙ্গে দহরম মহরম থাকায় সত্তর দশকে তাকে সিরীয় সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। আশির দশকে তিনি আফগানিস্তানকে আগ্রাসী রাশিয়ার দখলমুক্ত করতে কাবুলে ছুটে যান। সেখানে তিনি সুন্নি জিহাদিদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ করেছিলেন। কট্টরপন্থি মুসলিমদের মধ্যে তার ব্যাপক জনপিয়তা রয়েছে। তবে তিনি ইসলামিক স্টেটের আদর্শকে সমর্থন করতেন না।
এই জঙ্গি নেতা এমন এক সময়ে নিহত হলেন যখন সিরিয়ায় পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন পক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। দেশটিতে গত এক মাস ধরে অস্ত্রবিরতি চলছে। এর মধ্যেও ইসলামিক স্টেট ও নুসরাত ফ্রন্টের বিরুদ্ধে স্থল ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী।