নিজেদের বাঁচিয়েই বাংলাদেশেকে টাকা ফেরৎ দেবে ফিলিপাইন

প্রকাশ: ২০১৬-০৪-০৭ ১০:২৬:২১


Filipinফিলিপাইনে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে চুরির টাকা আইনি প্রক্রিয়া মেনে হস্তান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির আইনজ্ঞরা। কোনো তাড়াহুড়ো না করে টাকা হস্তান্তরে দেশের প্রচলিত আইন-কানুন অনুযায়ী তা করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে এ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে না হয়।

রিজার্ভ চুরির টাকা ফিলিপাইনে ব্যাংকিং সিস্টেমে আনা এবং বিপুল অংকের এ টাকা বিলি-বণ্টনে যোগসাজসে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে দেশটির সিনেট কমিটির চতুর্থ দফা শুনানি হয় কাল। আর এর একদিন পরই এ বিষয়ে পরামর্শ দিলেন ফিলিপাইন ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক শিক্ষক আমাদো ভালদেজ।

মঙ্গলবার সিনেট কমিটি চতুর্থ দফা শুনানির আয়োজন করে। গত মার্চে একই বিষয়ে আরো তিন দফা শুনানি করে এ কমিটি। চতুর্থ দফা শুনানিতে বক্তব্য রাখেন- রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) জুপিটার শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মাইয়া সান্তোস দেগুইতো, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারি প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তুতা, প্রতিষ্ঠানের ট্রেজারার ও তার স্বামী মাইকেল বাতিস্তুতা এবং ক্যাসিনো জাংকেট অপারেটর ক্যাম সিন অং ওরফে কিম অং।

তবে উদ্ধার হওয়া টাকা বাংলাদেশ সরকারকে ফেরৎ দেয়ার সম্ভাব্য পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনের সাবেক শিক্ষক আমাদো ভালদেজ বলেন, ‘আমার বিবেচনায় প্রথমে আদালতে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের বিরুদ্ধে জবাব দেয়ার কোনো পক্ষ না থাকলে তা একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত। এতে বিষয়টি সহজে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব।’

আমাদো ভালদেজ আরো বলেন, ‘এ প্রক্রিয়ায় এগুলো ভবিষ্যতে আইনি বিতর্ক থেকেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ মুক্ত থাকতে পারবে। কেউ অভিযোগ দাঁড় করাতে চাইলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ আদালতের রায় দেখাতে পারবে।’

এদিকে ফিলিপাইন সিনেটের অর্থ বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান তিয়োফিস্তো গুনগোনা বলেছেন, ‘রিজার্ভ চুরিতে জড়িত ক্যাসিনো জাংকেট অপারেটর কিম অংয়ের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা বাজেয়াপ্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন জানাবে দেশটির অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) কর্তৃপক্ষ।’ মঙ্গলবার কমিটির চতুর্থ দফা শুনানি শেষে বুধবার এ কথা জানান গুনগোনা। শুনানির পর এএমএলসিকে আদালতে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। ওই টাকার ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানো হয় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখায় ব্যবসায়ী কিম অংয়ের অ্যাকাউন্টে।

চুরির টাকার বাকি ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানো হয় শ্রীলংকার সেচ্ছাসেবী সংগঠন শাকিলা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। তবে প্রাপক সংস্থার নামের বানানে ভুল থাকায় ওই টাকার পেমেন্ট আটকে দেয় ব্যাংক কর্মকর্তারা।