চৈত্রের গরমে দেশবাসী যখন অস্থির তখন কোনো সুখবর নেই আবহাওয়া অফিসের কাছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও বাড়বে। সঙ্গে বাড়বে গরমের পরিমাণও। আর এই গরম আরও চার থেকে পাঁচদিন অব্যাহত থাকবে। তবে বৃষ্টি হলে গরম কিছুটা কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ শুক্রবার আবহাওয়া অফিস জানায়, গত কয়েক দিন ধরে সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই গরম অনুভূত হচ্ছে। রাত ও দিনের সময়ের পার্থক্যের কারণে দিনে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। তবে বৃষ্টি হলে গরম কিছুটা কমবে, জনজীবনে স্বস্তি আসবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া ঈশ্বরদীতে ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, খুলনায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মংলায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যশোরে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুমারখালীতে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ফরিদপুরে ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও গোপালগঞ্জে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সূর্যের কিরণ বেশি হওয়ায় এসব এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে নেই বৃষ্টিপাত। দিনের অধিকাংশ সময় পড়ছে প্রখর রোদ। এতে গরমে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ব্যাহত হচ্ছে নগরবাসীর স্বাভাবিক কাজকর্ম। প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই চলতে হয় পথচারীদের। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গেছে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
চলতি মাসে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন আবহাওয়াবিদরা। এমন অবস্থায় হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গত বছর এমন সময়ে হিটস্ট্রোকে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে। রাজধানীতে ইতোমধ্যে তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তাপমাত্রা বাড়লে ডায়রিয়ার জীবাণুগুলোর সংক্রমণের ক্ষমতা বেড়ে যায় জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়রিয়ামুক্ত থাকতে পানি ফুটিয়ে খেতে হবে। আর হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগেই সতর্ক থাকতে হবে। দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকা যাবে না। অতি প্রয়োজন না হলে রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। রোদে কাজ করার সময় মাথা ও শরীরে ঢাকনা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
প্রচুর পরিমাণ তরল জাতীয় কিছু খেতে হবে। ঢিলাঢালা পোশাক বিশেষ করে সূতি কাপড় পরিধান করতে হবে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে ছায়াচ্ছন্ন স্থানে শুইয়ে দিতে হবে। ঠাণ্ডা পানি (রেফ্রিজারেটরের পানি নয়) নিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। এতে উন্নতি না হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সানবিডি/ঢাকা/আহো