আমাদের একটা কমন সমস্যা হচ্ছে নিজেদের অতীত ভুলে যাওয়া, একটু বিখ্যাত হলেই নিজের মাঝে একটা ‘মুই কি হনু রে’ ভাব নিয়া আসা!
জেমস ক্যামেরুন এর স্বীকার করতে কোন সমস্যা হয়নি যে তিনি এক সময় ট্রাক ড্রাইভার ছিলেন, আরিফিন শুভর বলতে অসুবিধা হয়না তিনি তার গ্রামের বন্ধুর কাছ থেকে ১৫৬ টাকা ধার নিয়ে মডেলিং করতে এই ঢাকাতে আসেন এবং বন্ধুর মেসে থাকতেন।
শাহরুখ খানের এটা বলতে কোন সমস্যা নেই যে তিনি মুম্বাইতে এসে পার্কের বেঞ্চে ঘুমাতেন আর বন্ধুর কাছ থেকে ২০ টাকা ধার করে ফিল্ম সিটিতে শুটিং দেখতে যেতেন। রজনীকান্তের এটা বলতে সমস্যা হয় না যে তিনি একজন বাসের হেলপার ছিলেন। ঢাকায় কনসার্ট এ এসে সাড়ে ২৬ হাজার লোকের সামনে লাইভ অনুষ্ঠানে অক্ষয় কুমারের স্বীকার করতে কোন দুঃখ হয়না যে তিনি এই বাংলাদেশের পুরবানি হোটেলের শেফ ছিলেন।
যত সমস্যা আমাদের শাকিব খানের। তিনি বলেন যে, একবার এফডিসিতে শুটিং দেখতে গেলে এক সাংবাদিক তাকে ‘আরে তুমি তো অনেক সুন্দর’ বলে ছবি তুলতে শুরু করেন। এরপর এই ছবি এক পরিচালকের হাতে যায় আর তিনি ছবিতে চান্স পেয়ে যান! এত সোজা হলেতো যাদের চেহারা একটু ভালো সেই নায়ক হয়ে যেতো!
আসল কাহিনী হল নৃত্য পরিচালক আজিজ রেজা শাকিবকে এই মিডিয়ার দুনিয়ায় নিয়ে আসেন। শাকিবের জন্য এমন কিছু নেই যা তিনি করেননি। আগে শাকিবের স্বাস্থ্য খারাপ ছিল। সে যাতে একটু স্বাস্থ্যবান হয়ে দেখতে সুন্দর হয় এজন্য আজিজ এক
রেস্টুরেন্ট ভাড়া করেন। যেখানে বলা ছিল- শাকিব যখন ইচ্ছা এসে যা ইচ্ছা খাবে, বিল সব আমি দিব।
অথচ এই শাকিব এখন আজিজ রেজাকে চেনেন না। এমনকি আজিজের বাবা মারা যাওয়ার দিন আজিজের বাসা থেকে মাত্র দশ মিনিটের দূরত্বে শাকিব শুটিং করছিলেন। অথচ খবর পাওয়ার পরেও তিনি আজিজের বাবার জানাজায় আসেননি।
বাকি সবার সাথে শাকিবের পার্থক্য এখানেই। তিনি সম্ভবত একমাত্র নায়ক, যিনি নিজেকে এক নাম্বার বলে নিজের নামে ছবি বানান ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’। কিন্তু অন্যদের এটা করতে হয় না, কারণ তারা তাদের অতীত, তাদের সংগ্রামের কথা ভোলেন না। এজন্য রজনীকান্ত ইজ রজনীকান্ত। আর গুগলে নাম্বার ওয়ান পপুলার স্টার অন দা আর্থ লিখলে শাহরুখ এর নাম আসে।
আমি শাকিবকে কোন দোষ দেইনা, কিন্তু যেই মানুষ তার অতীত ভুলে যায় তার ফল কিন্তু ভাল হয়না।
সৈয়দ নাজমুস সাকিব, অতিথি লেখক