ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসিন চৌধুরীর বিদেশে চলে যাওয়ার ঘটনায় বিএফআইইউ, সিআইডি ও দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্তে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
রোববার (৮ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিতভাবে এ আদেশ দেন।
আদালতে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে, গত ৪ জানুয়ারি ‘দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে ইয়াসিন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসিন চৌধুরী। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামে তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও তিনি দুবাইয়ে বিলাসী জীবন কাটাচ্ছেন।
ইয়াসিন চৌধুরী বিদেশে অবস্থান নিয়ে সরকারবিরোধী নানা তৎপরতাও শুরু করেছেন। তিনি সরকারবিরোধী সবাইকে আন্দোলনে মদদ ও অর্থের জোগান দিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গেও তার যোগাযোগ হয়েছে। নুরের দল পরিচালনা ও বিভিন্ন আন্দোলনে অর্থের জোগান দিচ্ছেন ইয়াসিন চৌধুরী।
জানা গেছে, জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়েছেন ইয়াসিন চৌধুরী। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেও ঋণ নিয়েছেন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের এই উদ্যোক্তা। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী জাহাজ নির্মাণ ও হস্তান্তর করেনি তার প্রতিষ্ঠান এফএমসি ডকইয়ার্ড। গ্রাহক ও ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া পুরো টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
এএ