২০২২ সালে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে বিমা খাতের লোকসান ১২০ বিলিয়ন ডলার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২৩-০১-১১ ২২:০২:৩২
বিশ্বব্যাপী বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গেলো বছর আনুমানিক ২৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ বা ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ বিমা অথবা পুনর্বিমা দ্বারা আবরিত ছিল। জার্মান বহুজাতিক বিমা কোম্পানি মিউনিক রি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম এই পুনর্বিমা প্রতিষ্ঠান বলছে, ২০২২ সালে বিমাকৃত ক্ষতির পরিমাণ সাম্প্রতিক বছরগুলোর লোকসানের চেয়ে বেশি এবং গত পাঁচ বছরের গড় ক্ষতির চেয়ে প্রায় ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি।
বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় আরেক বিমা ও পুনর্বিমা কোম্পানি সুইস রি গত মাসের এক প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে এই ক্ষতির অনুমান করেছিল ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; মিউনিক রি’র হিসাবে যা ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাপী সামগ্রিক ক্ষতির এক তৃতীয়াংশেরও বেশি এবং বিমাকৃত ক্ষতির প্রায় অর্ধেক লোকসান এসেছে হারিকেন ইয়ান থেকে, যেটাকে (এনএফআইপি ক্ষতি ব্যতীত) ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামগ্রিক ক্ষতি এবং ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিমাকৃত ক্ষতির কারণ হিসাবে দেখছে মিউনিক রি।
হারিকেন ইয়ান সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। গত সেপ্টেম্বরে উপকূলে আঘাত হানার সময় চার মাত্রার হারিকেন ইয়ানের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ মাইল ছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) ।
জলবায়ু পরিবর্তন ক্রমবর্ধমান ক্ষতির সম্মুখীন করছে বলে মন্তব্য করেছেন মিউনিক রি’র বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের সদস্য টমাস ব্লাঙ্ক। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল অনুসারে ২০২২ সালের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিসংখ্যানগুলো এমন ঘটনাগুলোর দ্বারা প্রাধান্য পেয়েছে যা আরও তীব্র বা আরও ঘন ঘন ঘটছে।
কিছু ক্ষেত্রে, উভয় প্রবণতা প্রযোজ্য। আরেকটি উদ্বেগজনক দিক যা আমরা বারবার প্রত্যক্ষ করি তা হল প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর লোকদের ক্ষতি করে। এ জন্য প্রতিরোধ এবং আর্থিক সুরক্ষা যেমন- বিমা ইত্যাদিকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া উচিত, বলেন টমাস ব্লাঙ্ক।
ইয়ানের পরেই ২০২২ সালের দ্বিতীয়-ব্যয়বহুল এবং সবচেয়ে মানবিক বিপর্যয় ছিল পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, যা রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত গুণ বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হয় এবং এ ঘটনায় কমপক্ষে ১ হাজার ৭শ’ মানুষ প্রাণ হারায়।
পাকিস্তানের ওই বন্যায় সরাসরি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমান করেছিল মিউনিক রি, যা দেশটির মোট অভ্যন্তরীণ পণ্যের (জিডিপি) আকারের প্রেক্ষিতে ছিল খুব বড়।
তবে বন্যাকবলিত ওই অঞ্চলে বিমা পেনিট্রেশন কম হওয়ার কারণে প্রায় সকল কিছুই বিমার আওতার বাইরে ছিল এবং এর ফলে অগণিত লোক তাদের সমস্ত জিনিসপত্র হারিয়েছে বলে জানিয়েছে মিউনিক রি।
সূত্র: রিইন্স্যুরেন্স নিউজ
এএ