প্রবল গরমে পুড়ছেন! হাঁসফাঁস করছেন আর কপাল থেকে গড়িয়ে পড়ছে ঘাম। ক্রমশ মুছলেও সমস্যা থেকে পাচ্ছেন না মুক্তি। চরম বিরক্তির মধ্যে রয়েছেন। মনে মনে ভাবছেন, ধুর! কি বিশ্রী অবস্থা!!
আসলেই কি ঘাম খুব খারাপ কিছু? সোজাসাপ্টা চিন্তায় আসলে সে রকমই মনে হয়। তবে তীব্র গরমে মোটা অথবা চরম ভয়ে আপনার চর্মগ্রন্থি থেকে বেরিয়ে আসা ঘাম আপনাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক উপকার এনে দেয়। একটু ভেবে দেখা যাক চলুন।
-ব্যায়াম বা অন্যান্য কায়িক পরিশ্রম বা তীব্র আবেগিক অনুভূতির সময় আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় অনেক বেশি। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফল হিসেবে আমাদের ঘর্মগ্রন্থি ঘাম তৈরি করে।
-ত্বকের উপরিভাগের এই ঘাম বাষ্পে পরিণত হতে অনেক তাপ প্রয়োজন যার যোগান দেয় শরীরে সৃষ্ট অতিরিক্ত তাপ। ফলে শরীর তার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে গিয়ে আপনাকে আবার শীতল অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়।
-ঘামের আরেকটি উপকারিতা হল তা দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ দেহের বাইরে বের করে দেয়। বিষাক্ত পদার্থ বা আবর্জনা ঝেড়ে ফেলার এই কাজটি করে প্রধানত আমাদের কিডনী। তবে যত দ্রুত কাজ শেষ হওয়া প্রয়োজন তত দ্রুত কিডনী কাজ করেনা।
-ঘাম হওয়ার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রেরও উন্নতি সাধিত হতে পারে। দেহ যখন তাপের সঙ্গে ঘাম উৎপন্ন করে তখন হৃদযন্ত্র দেহাভ্যন্তরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। নিয়মিত ঘাম তাই শরীরের জন্যে দীর্ঘমেয়াদী উপকার বয়ে আনতে পারে।
-ঘাম উপকার বয়ে আনতে পারে সৌন্দর্য সচেতন মহিলা-পুরুষেরর জন্যেও। ঘাম এক ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা মানুষের ত্বকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করে যাওয়া ক্ষতিকর অণুজীবকে দমন করে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রাখে।
-ঘাম ত্বকের বদ্ধ ছিদ্রপথগুলো উন্মুক্ত করে দেয় যা ত্বকের নির্মলতায় ও গঠনে ভিন্ন মাত্রা দেয়। অতিরিক্ত ঘাম তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণগুলোকে ধীর করে দেয় আর ত্বকের ক্ষতির প্রভাবকেও কমিয়ে দেয়।
-ঘাম যেহেতু ত্বক থেকে সব বিষাক্ত উপাদানগুলো বের করে দেয় তাই একবার ঘেমে নেয়ে উঠলে আপনার ত্বক বিষমুক্ত হয়েছে বলে ধরে নিতে পারেন। তবে অনেকেই আছেন যারা এসিতে বসেও রীতিমত ঘামেন। অনেকেই ঘামেন উচ্চ-রক্তচাপের কারণে।
-যাঁদের বয়স অসময়ে বেড়ে যাচ্ছে, তারাও নিয়মিতভাবে একটু ঘেমে নেবার কথা ভেবে দেখতে পারেন। কারণ শরীরে জমে থাকা চর্বি শরীরে উৎপন্ন তাপের ফলে গলে গিয়ে জলে দ্রবণীয় যৌগে পরিণত হয় যা ঘামের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে।
আগেই বলা হয়েছে এই তাপ উৎপন্ন হয় কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের কারণে। তাই মেদ ঝরাতে ব্যায়াম করা জরুরি।